সার মিশ্রিত পানি অপসারণের কাজ বন্ধ


প্রকাশিত: ১১:৩০ এএম, ০৮ মে ২০১৫

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরনখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীর বিমলের চর এলাকায় ডুবে যাওয়া জাহাজের অভ্যন্তরে সার মিশ্রিত পানি অপসারণের কাজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর বন্ধ হয়ে গেছে। সারবোঝাই এম ভি জাবালে নূর লাইটারেজ জাহাজটি উদ্ধারের প্রাথমিক কাজ হিসেবে ১০ ফুট বিশিষ্ট হোস পাইপ দিয়ে কার্গো জাহাজের নিচের সার মিশ্রিত পানি তোলা সম্ভব না হওয়ায় এ কাজ বন্ধ রাখা হয়।

শুক্রবার বিকেলে ২০ ফুট বিশিষ্ট হোর্স পাইপ সেখানে পৌঁছনোর পর আবারও কাজ শুরু হবে বলে শরনখোলা ইউএনও মো. অতুল মণ্ডল জাগো নিউজকে জানান। জাহাজটি উদ্ধারের প্রাথমিক কাজের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে ডুবন্ত কার্গোর ভেতরের সার অন্য কার্গোতে সরানোর জন্য বালু উত্তোলনকারী ড্রেজারের মেশিন ব্যবহার করা হয়।

এদিকে লাইটারেজ জাহাজ ডুবির ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরে শরনখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. অতুল মণ্ডলের কার্যালয়ে ওই কমিটির সদস্যরা পরবর্তী করণীয় বিষয় নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক করেছেন বলে জানান এই কমিটির অন্যতম সদস্য শরনখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. অতুল মণ্ডল।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার জাহাজটি উদ্ধারের প্রাথমিক কাজ হিসেবে জাহাজের অভ্যন্তরের গলিত সার ১টি বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার মেশিন দিয়ে অন্য কার্গোতে সরানোর কাজ শুরু হয়। বিকেলে নদীতে ভাটা থাকায় বেশ জোরেই এগিয়ে চলে গলিত সার অপসারনের প্রক্রিয়া। তবে ১০ ফুট বিশিষ্ট হোস পাইপ দিয়ে কার্গোর নিচের গলিত সার মিশ্রিত পানি আর তোলা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার পর কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ভাটার সময়ে ২০ ফুট বিশিষ্ট হোস পাইপ দিয়ে পুনরায় সার অপসারনের কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
 
ইউএনও আরও জানান, সার অপসারণের পরই জাহাজটিকে অন্যত্র সরানোর চিন্তা ভাবনা করা হবে। তিনি বলেন, যেহেতু জাহাজটির তলা ফেটে গেছে তাই এটিকে কীভাবে নদী থেকে উদ্ধার করা হবে সে বিষয় নিয়েও  বিআইডব্লিউটি-এর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সময়ে বিআইডব্লিউটি-এর দুই কর্মকর্তাও জাহাজটি উদ্ধারের বিষয়ে বাস্তব অবস্থা উপলব্ধি করেছেন। প্রাথমিক কাজ হিসেবে শরনখোলা উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে জাহাজটি উদ্ধারের প্রাথমিক কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

 উল্লেখ্য, দুর্ঘটনা কবলিত লাইটারেজ জাহাজটি মংলা বন্দরের অদূরে পশুর নদীর হারবারিয়া এলাকা থেকে ৬শ` ৭০ মেট্রিকটন পটাশ সার বোঝাই করে গত পহেলা মে আশুগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথিমধ্যে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরনখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীর বিমলের চরে আটকা পড়ে  ৪ মে সোমবার সন্ধ্যায় চরে আটকা পড়ে। মঙ্গলবার বিকেলে জাহাজটির তলা ফেটে পটাশ সার সুন্দরবনের ভোলা নদীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে কর্গোটি কাত হয়ে একটি অংশ ডুবে যায়।

গত ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলাধীন চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীর মৃগমারী এলাকায় এমটি টোটাল নামে একটি জাহাজের ধাক্কায় ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ নামে তেলবাহি জাহাজটির তলা ফেটে ডুবে যায়। ২৮ দিন বন্ধ থাকার পর ৭ জানুয়ারি থেকে সরকার নিয়ন্ত্রিত উপায়ে শুধুমাত্র দিনের আলোয় শ্যালা নদী পথে আবারও নৌযান চলাচলের অনুমতি দেয়। তেলবাহী জাহাজ ডুবির ৫ মাস যেতে না যেতেই গত ৫ মে মঙ্গলবার পটাশ সার বোঝাই কার্গো এমভি জাবালে নূরের তলা ফেটে সুন্দরবনের ভোলা নদীতে ডুবির ঘটনা ঘটে।

শওকত আলী বাবু/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।