মা যেন এক বটবৃক্ষ


প্রকাশিত: ০৩:৩০ এএম, ১৪ মে ২০১৭

ছোট্ট একটি শব্দ ‘মা’। একটি অদ্ভুত ভালোলাগার অনন্য এক শব্দ। শুধু আমার কাছে নয়, পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় শব্দ এটি। যার জন্য পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখা। তিনিই হলেন মা।

আমরা ছয় ভাই ও এক বোন। আমি সবার ছোট। নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভারশোঁ গ্রামে মৎস্যজীবী পাড়ায় বেড়ে উঠা। আমরাও মৎস্যজীবী। যেখানে কেটেছে আমার শৈশব ও কৈশর।

বাবা মারা গেছেন ২০০৭ সালে। তার দু’মাস পর আমার এইচএসসি পরীক্ষা। মা আমাকে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েন। তবে আমার সাথে ভাই বা বোনদের তেমন সুসম্পর্ক নেই। সবদিক থেকে আমি বঞ্চিত ও শোষিত। সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই। পরীক্ষা শেষ হলো। রেজাল্টও হলো। নওগাঁ সরকারি কলেজে অর্নাসে ভর্তি হলাম। মা গ্রামের বাড়িতে থাকেন। আর আমি শহরে। কষ্ট করে হলেও পড়াশুনা শেষ করেছি। গ্রামে থাকলে হয়তো পড়াশুনা আর হয়ে উঠতো না। কারণ যেখানে বসবাস করতাম, সেখানে প্রায় ১৪টি জাতির বসবাস। যেখানে মদ, গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশা ভান ও মারপিট এবং মামলা হামলাসহ অহরহ হয়ে থাকে।

মার স্বপ্ন ছিল আমাকে মানুষের মতো মানুষ করা। মার সে স্বপ্ন আজ পুরণ হয়েছে। তবে মাকে ছাড়াই শহরের থাকতে হচ্ছে। শব্দ আর ইট পাথরের শহর মার ভাল লাগে না। তাই গ্রামে থাকেন। তবে মা সব সময় খেয়াল রাখেন। সন্তান কি ঘরে ফিরেছে, কী খেয়েছে, না খেয়েছে। তবে আমি অসুস্থ হলে মাকে ফোন দিয়ে জানানোর দরকার হয় না। মা নিজেই বুঝতে পারেন আমি অসুস্থ। সব মায়েরই মনে হয় এটা আল্লাহ প্রদত্ত একটা শক্তি।

মার বয়স হয়েছে। আমাকে নিয়ে মা সবসময় দুশ্চিন্তার কারণে বেশির ভাগ সময়ই অসুস্থ থাকেন। সবাই আমার মার জন্য দোয়া করবেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি যেন সুস্থ সবল থাকতে পারেন।

মা শুধু আমার কাছে মা-ই নয়, বন্ধুর মতো। ভালো-মন্দ সবকিছুই মায়ের সঙ্গে শেয়ার করি। একমাত্র মা`ই আমার পথপ্রদর্শক। মা যেন এক বটবৃক্ষ। সন্তানের কাছে মা হচ্ছে একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মায়ের এতো কাছে থেকেও মাকে আজো বলা হয়নি- মা তোমায় অনেক অনেক ভালোবাসি। ভুলেও যদি কষ্ট দিয়ে থাকি আমায় ক্ষমা করে দিও মা।

মা দিবসের প্রতি আমার বিশেষ কোনো আগ্রহ নেই। কারণ আমার কাছে মা এমনই জিনিস যাকে ভালোবাসার জন্য কোনো দিবস বা সময় লাগে না। প্রতিটি মা সুস্থ ও ভালো থাকুন। মা দিবসে পৃথিবীর সকল মাকে আমার সালাম।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।