জিপিএ-৫ পেয়েও হতাশ নুরুন্নাহার


প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ০৬ মে ২০১৭

জিপিএ-৫ পেয়েও হতাশায় ভুগছে নুরন্নাহার। দিনমজুর বাবা আর অন্যের বাড়িতে কাজ করা মা যে তাকে আর পড়াতে পারবে না এই ভাবনায় হতাশায় ডুবিয়ে রেখেছে নুরন্নাহারকে। এজন্যই তো সে বলছে, সামনে যে আমার কপালে কী আছে তা আল্লাহই জানে।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামের দিনমজুর আমজাদ হাওলাদারের মেয়ে নুরন্নাহার। ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া এই মেধাবী শিক্ষার্থী টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

একটি টিনের ছাপরা ঘরে নুরুন্নাহারের বসবাস। দুটি চৌকি ও হাড়ি পাতিল ছাড়া ঘরের মধ্যে তেমন কিছুই নেই। ঘরের বেড়া দেয়া রয়েছে জং পরা টিন দিয়ে। বইপত্র সাজানো রয়েছে চৌকির ওপর। আর সেই ঘরের এক কোনে বসেই এতদিন পড়াশুনা করেছে সে।

জানা গেছে, নুরুন্নাহারের দিনমজুর বাবা বয়সের ভারে ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে এখন আর কাজকর্ম করতে পারেন না। চার বোনের মধ্যে নুরুন্নাহার দ্বিতীয়। মেজো বোন নবম শ্রেণিতে আর ছোট বোন নুরানী মাদরাসার ২য় জামাতে পড়াশুনা করছে।

মা হাসিনা বেগম অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে সংসার চালায়। ওই কাজের উপর নির্ভর করেই চলছে তাদের পাচ সদস্যের সংসার।

Patuakhali

 

নুরুন্নাহারের মা হাসিনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, আমাগো মেয়ে স্কুলের পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাইছে। বাবা আমরাতো অতো লেহা পড়া না। আমরা তো তারে লেহাপড়া করামু হেই সামর্থ নাই। অতদিন স্কুলের স্যারেরা সাহায্য করছে মাইয়াডা লেহাপড়া করছে। এ্যাহন কলেজে ভর্তি। এরপরে বই কিনতে টাকা আরও কতো কিছু আছে। কী দিয়া কি যে করমু ভাইবা পাইনা।

নুরুন্নাহার জানায়, আমার খুবই স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা করে ডাক্তার হবো। সেটা বুঝি সম্ভব না। সামনের দিনগুলোতে আমার কপালে কী যে আছে তা আল্লাহই জানে।

বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইরতেজা হাসান মনির জাগো নিউজকে বলেন, নুরুন্নাহার দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও সে অত্যন্ত মেধাবী। আমাদের বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি ও সম্পূর্ণ ফ্রি লেখাপড়া করেছে। ওর পাশে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে ভবিষ্যতে সে আরও ভালো করবে বলে আমার বিশ্বাস।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।