প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুন্দরবনের ধ্বংস করবে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বেশি দামে বিদ্যুৎ, দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সর্বোপরি বাংলাদেশে প্রধান প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুন্দরবনে অনিবার্য ধ্বংস করবে।
তিনি বলেন, ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক ঋণের বোঝা চাপাবে বাংলাদেশের ঘাড়ে। ভারতীয় হ্যাবি ইলেট্রিক কোম্পানি নির্মাণ কাজ করে ও কয়লা জোগান দিয়ে মুনাফা করবে। আর এক্সিম ব্যাংক ঋণের ব্যবসা করবে। বাংলাদেশের ভাগে থাকবে শুধু লোকসান ও সর্বনাশ।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে উপকূলীয় মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উপকূলীয় অঞ্চলের ৫ কোটি মানুষের জীবন ও সম্পদের জন্য হুমকি রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী অপতৎপরতা বন্ধ, এ অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং ঘরে ঘরে সুলভে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাবিতে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
৯ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন আন্দোলনে যুক্ত সব দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, সংগঠন ও ব্যক্তিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সুন্দরবন কনভেশন। এর মধ্যেও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প বাতিল না করা হলে রামপাল মার্চ, দেশব্যাপী হরতালসহ আরও কঠোর কর্মসূচি নেয়া হবে। এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত ও আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়ার সহায়তায় প্রকল্প বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের মিথ্যাচার ছড়িয়ে সরকার রামপাল প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এসব প্রকল্পে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ জীবন-জীবিকা হারিয়ে উদ্বাস্তেু পরিণত হবেন। পাঁচ কোটি মানুষকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে অরক্ষিত করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হবে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সুন্দরবনের কাছে বে-আইনিভাবে জমি-বন দখল করছে, যারা কমিশন ভোগী, যারা ভাড়াটে বিশেষজ্ঞ তারা ছাড়া দেশে-বিদেশের বিশেষজ্ঞ এবং জনগণ সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের শক্তি। উন্নয়নের অনেক বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নেই। অবিলম্বে প্রকল্প বাতিল না হলে রামপাল মার্চসহ কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
কর্মসূচির মধ্যে ২৫ এপ্রিল থেকে ২৫ জুন উপকূলীয় অঞ্চলে জেলা উপজেলায় সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ। মে মাসে সরকারের ব্যয়বহুল পরিবেশ বিধ্বংসী, ঋণ নির্ভর বেশি দামের বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনার বিপরীতে সুলভ, পরিবেশ বান্ধব, ঋণ বা অপচয়মুক্ত ও দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিকল্প বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা উপস্থাপন ও দেশ ব্যাপী তা নিয়ে জনমত গঠন।
জাতীয় কমিটির খুলনার সংগঠক মনোজ দাসের সভাপতিত্বে এবং খুলনা জেলা আহ্বায়ক এসএ রশীদ এবং সদস্য সচিব মোস্তফা খালিদ খসরুর পরিচালনায় মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নেতা টিপু বিশ্বাস, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশিদ ফিরোজ, জোনায়েদ সাকি, বহ্নিশিখা জামালী প্রমুখ।
আলমগীর হান্নান/এআরএ/জেআইএম