টর্চার সেলে নির্যাতনের পর পুরুষাঙ্গ পুড়ে দিয়েছে তারা


প্রকাশিত: ০৫:২৩ এএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৫

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় যুবককে টর্চার সেলে রাতভর আটক রেখে পৈশাচিক নির্যাতন করেছেন কয়েকজন বখাটে। এসময় তাকে লোহার রড গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুটো করে দিয়েছে বখাটেরা। এরপর সিগারেটের আগুন দিয়ে ঝলসে দেয়া হয়েছে শরীরের বিভিন্ন অংশ। শুধু তাই নয় মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে তার পুরুষাঙ্গও সিগারেটের আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা গ্রামে। নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের নাম মতিন দেওয়ান (৩০)। তিনি ওই উপজেলার পয়সারহাট গ্রামের মানিক দেওয়ানের ছেলে।

বর্তমানে নির্যাতনের পর ওই যুবক এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এদিকে এঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ এখনো অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বাগধা গ্রামের প্রয়াত চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহীদুল্লাহ তালুকদারের ছেলে নিপু তালুকদার ও তার সহযোগীরা।

গত রোববার দুপুরে আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে মানিক দেওয়ান মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা বিভীষিকাময় লোমহর্ষক ওই নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এসময় মতিন জানান, পার্শ্ববর্তী খাজুরিয়া গ্রামের প্রবাসী হুমায়ুনের স্ত্রী মরিয়ম বেগমের সঙ্গে ৪-৫ মাস আগে পরিচয়ের সূত্র ধরে দুই পরিবারের সম্মতিতে তাকে ধর্ম বোন ডাকি। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে মরিয়মের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ধার নেই। গত ২১ এপ্রিল সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে ধার নেয়া সেই টাকা পরিশোধ করতে তাদের (মরিয়মের) বাড়ি যায়। সেখানে যাওয়ার পর মরিয়মের মায়ের অনুরোধে রাতের খাবার খাই। এসময় তাদের বাড়িতে আসে বখাটে নিপু। এরপর সে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে। এসময় আমাকে ও মরিয়মকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলে নিপু। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করে জোরপূর্বক নিপু তার বাড়িতে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে হাত-পা বেঁধে নিজের গোপন টর্চার সেলে আটকে রাখে আমাকে। এরপর তার চার বন্ধু মিলে লোহার রড দিয়ে সারারাত মারধর করে এবং শরীর ফুটো করে দেয়। এরপর শরীরে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেয় তারা। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। এতেই ক্ষান্ত হননি নিপু ও তার বন্ধুরা। যখনই জ্ঞান ফিরেছে তখনই মারধর করেছে তারা। এক সময় তারা আমাকে মৃতভেবে গভীর রাতে বাগধা এলাকার রাস্তায় ফেলে রেখে যায়।

পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন। একদিন চিকিৎসা নেয়ার পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে আমাকে পাঠানো হয় বরিশাল শেরই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এদিকে এ ঘটনায় গতকাল সোমবার আগৈলঝাড়া থানায় নিপুকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মতিন দেওয়ান। তবে পুলিশ এখনো আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত নিপুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার ফোনটি বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এমজেড/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।