মালদ্বীপের মডেল কন্যা হত্যা মামলা সিআইডিতে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:০৬ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০১৭

রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ও মালদ্বীপের মডেল রাউধা আথিফ হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলাটিও তদন্ত করবে সিআইডি।

সিআইডির রাজশাহী বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এই মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি। সিআইডির রাজশাহীর পরিদর্শক আসমাউল হককে মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার সকালে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা দুটি মামলারই কাগজপত্র আগের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বুঝে নিয়েছেন। মামলা দুটি হলেও ঘটনা এক হওয়ায় সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা একটি ঘটনারই তদন্ত করবেন। এরপর তদন্তে যা পাওয়া যাবে, সে অনুযায়ী অভিযোগপত্র দেবে সিআইডি।

গত ২৯ মার্চ বেলা ১১টার দিকে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রীনিবাসের দ্বিতীয় তলার ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে রাউধা আথিফের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাউধার বাড়ি মালদ্বীপের মালেতে। তার বাবা মোহাম্মদ আতিফ পেশায় চিকিৎসক। ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি ওই কক্ষে ওঠেন এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রাউধা। এ নিয়ে ওদিনই হাসপাতালের সচিব আব্দুল আজিজ রিয়াজ থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন।

খবর পেয়ে ৩০ মার্চ রাজশাহী আসেন রাউধার স্বজনসহ মালদ্বীপের প্রতিনিধি দল। পরিবারের সিদ্ধান্তে ২১ মার্চ দুপুরের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়।

রামেক হাসপাতাল ফরেনসিক বিভাগের সাবেক বিভাগী প্রধান অধ্যাপক মুনসুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দল ময়নাতদন্ত করেন। রাউধা আথিফ আত্মহত্যা করেছেন এই মর্মে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। পরদিন নগরীর হেঁতেমখা গোরস্থানে দাফন করা হয় মরদেহ।

রাউধার মৃত্যুর তদন্তে গত ৩ এপ্রিল মালদ্বীপের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রিয়াজ ও জ্যেষ্ঠ পরিদর্শক আলী আহমেদ রাজশাহী আসেন।

তারা রাউধার মরদেহ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, রাজশাহী পুলিশ, রাউধার সহপাঠী, শিক্ষক এবং হোস্টেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। চারদিনের মাথায় ৭ এপ্রিল দেশে ফেরেন তারা।

এর তিনদিন পর ১০ এপ্রিল রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। পরদিন সেটি রেকর্ড করে শাহমখদুম থানা পুলিশ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, রাউধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মামলায় ভারতের কাশ্মিরের বাসিন্দা ও রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

তবে এখনো ওই ছাত্রীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ গণমাধ্যমকে জানান, তিনি বিশ্বাস করেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তিনি রাউধার গলায় শ্বাসরোধ করার দাগও দেখেছেন।

এর আগে রাউধা হত্যা মামলাটি তদন্তভার দেয়া হয়েছিল শাহমখদুম থানার পরিদর্শক আনোয়ার আলী তুহীনকে। এছাড়া অপমৃত্যু মামলাটি তদন্ত করছিলেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক রাশিদুল ইসলাম। এ নিয়ে আনুষ্ঠানিত কোনো অগ্রগতি জানায়নি পুলিশ।

বিখ্যাত সাময়িকী ‘ভোগ ইন্ডিয়া’ ২০১৬ সালের অক্টোবরে তাদের নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সংখ্যা প্রকাশ করে। তাতে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন হয় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে।

‘বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য উদযাপন’ (সেলিব্রেটিং বিউটি ইন ডাইভার্সিটি) শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের এই মডেল।

ভোগ ইন্ডিয়ার ওই প্রতিবেদনের জন্য দেয়া সাক্ষাৎকারে রাউধা বলেছিলেন, মডেলিং আমার কাছে পেশা নয়; শখই বেশি। পড়াশোনা শেষ করে চিকিৎসক হয়ে মানুষকে সাহায্য করা আমার কাছে সব সময়ের জন্য স্বপ্ন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।