এক যুগেও নির্মিত হয়নি সোমেশ্বরী নদীর দুপুরীয়া ব্রীজ
আমরাতো সাধারণ মানুষ, আমগর কষ্ট কেডায় দেহে। নাইলে এক যুগ পার অইলেও বিরিজিটার কামই শেষ অইলো না। এইডা কি কোন কতা অইলো। আক্ষেপ আর ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বললেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দুপুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মিয়া (৪৮)। তার মতোই নিজেদের কষ্টের কথা জানান, আয়নাপুর গ্রামের হাবিল উদ্দিন, আক্রাম হোসেন ও বিল্লাল মিয়া। তারা বলেন, সরকার আয়ে সরকার যায়, নেতা বদলায়, অফিসার পাল্টে, কিন্তু আমগরে ভাগ্যের বদল অয়না। নাইলে আমরা হাজার হাজার মানুষ এই দুপুরিয়া বিরিজটার নাইগ্যা এতদিন ধইরা কষ্ট করতাছি, কিন্তু ঠিক অইতাছে না। মনে অয় আমগর কপালডাই খারাপ।
শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীর মধ্যে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম ধানশাইল-আয়নাপুর সড়ক। এই সড়কের দুপুরিয়া সোমেশ্বরী নদীর দুপুরীয়া ব্রীজ এক যুগেও নির্মিত না হওয়ায় এ পথে যাতায়াতকারী মানুষের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের পাহাড়ী ঢলের পানির তোড়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সোমেশ্বরী নদীর ওপর অনেক পুরনো দুপুরিয়া ব্রীজটি বিধ্বস্ত হয়। এতে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার মধ্যে অভ্যান্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বহু আবেদন-নিবেদনের পর ২০০৮ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সোমেশ্বরী নদীর দুপুরীয়া ব্রীজটি নির্মাণ কাজে হাতে নেয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর ব্রীজটির নির্মাণ কাজ আর শুরু হয়নি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুন:স্থাপনের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় গ্রামবাসীরা ওই নদীর উপর বাঁশের সাকো নির্মাণ করেন। সাঁকো দিয়ে পারাপারের জন্য চলাচলকারীদের কাছ থেকে স্থানীয় একটি মহল চাঁদা আদায় করে আসছিল। কিন্তু গত ১১ আগষ্ট উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানির তোড়ে নদীর ওপর সেই বাঁশের সাকোটিও ভেসে যায়। এতে দুই উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নিরুপায় হয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ শতশত পথচারী জীবনের ঝঁকি নিয়ে কলার ভেলায় পারাপারে বাধ্য হচ্ছেন।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্ত্যব্যক্তিরা জানান, ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শুরুর পর বেশ কয়েকটি স্প্যান করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবারও সোমেশ্বরী নদীর পাহাড়ি ঢলে সেই নির্মাণ কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ঠিকাদার কাজটি ফেলে পালিয়ে যায়। যার কারণে কিছু জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় নির্মাণ কাজটি আর হয়নি। তাছাড়া সেমেশ্বরী নদীও বারবার গতিপথ পরিবর্তন করায় নানা কারণে সমস্য হচ্ছিল। এ ব্যাপারে শেরপুরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শোয়েব আহম্মদ বলেন, বিষয়টি আমি দেখবো।