মাঠে নয়, ভোটেই ছক্কা সাক্কুর


প্রকাশিত: ০৪:৩৩ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৭

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- এমনটি প্রমাণ করার কোনো জো ছিল না। ভোটগ্রহণের সারাদিন বিএনপি নেতাকর্মীর দৃশ্যমান কোনো নাম-গন্ধও ছিল না। চাপা উত্তেজনায় ভীতসন্ত্রস্ত ছিল সর্বমহলে। পুরো মাঠ ছিল নৌকার দখলে। তবে দিন শেষে ছক্কা। মাঠে নয়, ভোটেই খেললেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক ছাক্কু।

বৃহস্পতিবার দিনভর কুসিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকের মনিরুল হক সাক্কু রাজনীতি ছিল সকাল থেকেই মাঠছাড়া। চারদিকে শুধু নৌকার পোস্টার। অালোচনাতেও ছিল নৌকা। নৌকার সমর্থকদের দখলে ছিল ভোটকেন্দ্রগুলো। কেন্দ্রগুলোয় ধানের শীষ প্রতীকের চিহ্ন ছিল না বললেই চলে।

সকাল থেকে বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, অাওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অাঞ্জুমান সুলতানা সীমার নৌকা প্রতীক ছাড়া অার যেন কিছুই চোখে পড়ার মতো ছিল না। ভোটকেন্দ্রগুলো ছাড়া শহরজুড়েই নৌকার পোস্টার সাঁটানো ছিল। নৌকা প্রতীক গলায় ঝুলিয়ে কেন্দ্রগুলোর প্রবেশ মুখও দখলে ছিল অাওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা। নির্বাচনী ক্যাম্পগুলোতেও নৌকার ছিল জয়জয়কার।

কেন্দ্রগুলোর সামনে দু’একটি জায়গায় ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার চোখে পড়লেও বিএনপির কোনো নির্বাচনী ক্যাম্প চোখে পড়েনি। চোখে পড়েনি সাক্কু সমর্থকদের উপস্থিতিও। আর এ নীরবতাই যেন সাক্কুর ভাগ্য ফেরালো। মাঠে না থেকেও ভোটেই গণেশ উল্টে দেয় বিএনপি এ নেতার সমর্থকরা।

কুমিল্লা নগরের ভোটাররা এ ফলাফলের বেশ কয়েকটি কারণ কথা উল্লেখ করছেন। তারা বলেন, বিএনপির সমর্থকদের ‘নীরবতা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। বিএনপির সমর্থকেরা এক প্রকার নীরবেই ভোটগ্রহণের শুরুতে কেন্দ্রে প্রবেশ করে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়েই তারা কেন্দ্র থেকে সটকে পড়েন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনসহ সম্প্রতি অন্যান্য নির্বাচন থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই সাক্কু এমন কৌশলী অবস্থান নেন বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে কুমিল্লা সদর অাসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা অা ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের হাতেই সবশেষ গুটির চাল ছিল বলে মনে করছেন একটি পক্ষ। তারা মনে করছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার বাবা প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা অাফজাল খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত হিসেব মিটিয়েছেন বাহার। প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের পক্ষ নিলেও গোপনে ধানের শীষেই সিল মারেন বাহার অনুগতরা।

অন্যদিকে নজিরবিহীন নিরাপত্তার কারণে ভোটের দিন সকাল থেকে স্বস্তি ছিল জনমনে। নিরাপত্তায় অাস্থা পেয়েই সাধারণ ভোটাররা কেন্দ্রে অাসেন। যার ফল সাক্কুর ঘরে গিয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে।

অাবার জাতীয় রাজনীতির হিসাব-নিকাশও কাজ করেছে কুসিক নির্বাচনে। কেউ কেউ মনে করছেন সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের জবাব মিলছে কুসিক নির্বাচনে। জবাব মিলেছে স্থানীয় রাজনীতিরও।

এএসএস/এমএম/আরএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন