আতিয়া মহলে এখনো পড়ে আছে দুই জঙ্গির মরদেহ


প্রকাশিত: ০৯:১৯ এএম, ৩০ মার্চ ২০১৭

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে অপারেশন টোয়াইলাইট শেষ হওয়ার ৪৫ ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি ভবনের ভেতর পড়ে থাকা দুই জঙ্গির মরদেহ। মরদেহের শরীরে ও ভবনের ভেতরে আরও বিস্ফোরক থাকতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশ ভেতরে ঢুকছে না।

ঝুঁকিপূর্ণ আতিয়া মহলের ভেতর থেকে বিস্ফোরক ও মরদেহগুলো উদ্ধারে পুলিশের বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের ডাকা হয়েছে। ঢাকা থেকে গত বুধবার বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের সিলেট আসার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সিলেট এসে পৌঁছাননি। ফলে পুলিশও ভবনের ভেতরে ঢুকেনি।

গত মঙ্গলবার বিকেলে আতিয়া মহলে অপারেশন টোয়াইলাইট সমাপ্ত ঘোষণা করে দুটি মরদেহসহ ভবনের দায়িত্ব পুলিশকে বুঝিয়ে দিয়ে সেনানিবাসে ফিরে যান কমান্ডোরা।

অপারেশন টোয়াইলাইট শেষ হওয়ার পর এসএমপি পুলিশ শুধুমাত্র ভবনের আশপাশ এলাকা ঘোরাও করে রেখেছে। দেশে-বিদেশে আলোচিত আতিয়া মহলের আশপাশ এলাকায় এখনো যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। ফলে শিববাড়ি এলাকার জনজীবন স্বাভাবিক হয়নি।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বলেন, বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এখনো সিলেট এসে পৌঁছাননি। ঢাকা থেকে বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত করার পর পুলিশের ক্রাইম সিনের সদস্যরা ভবনের ভেতরে ঢুকে মরদেহ দুটি উদ্ধার ও আলামত সংগ্রহ করবেন।

মহানগর পুলিশের এই মুখপাত্র বলেন, আরও বোমা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে পারে এই আশঙ্কায় পুলিশ ভবনটি ঘেরাও করে রেখেছে। জনসাধারণকে নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরে রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলের নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও মহানগর পুলিশের একটি দল গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে জঙ্গিদের ফ্ল্যাটের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পুরো ভবনটি ঘিরে রাখে।

শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। পরে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল। পরদিন তারা ওই ভবনের ২৯টি পরিবারের ৭৮জন বাসিন্দাদেরকে জঙ্গিদের জিম্মি দশা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেন তাঁরা।

২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অভিযান চলাকালে দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয় জন নিহত হন। আহত হন র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানসহ ৪৬ জন।

অভিযানের চতুর্থ দিনে গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনী জানায়, অভিযানে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে আছে তিন পুরুষ ও এক নারী। ভবনের ভেতরে আর কোনো জীবিত জঙ্গি নেই। সেনা অভিযান সফলভাবে শেষ হওয়ার পর ভবনে থাকা দুটি মরদেহ ও আতিয়া মহলের দায়িত্ব পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

ছামির মাহমুদ/আরএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।