বিরামপুরের প্রাচীন ভৈরব রাজার মেলা


প্রকাশিত: ০২:০৩ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

বিরামপুরের তৎকালিন ভৈরব রাজা প্রতিষ্ঠিত ৩১০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক চৈত্র-সংক্রান্তির মেলাটি জেলার ক্রেতা-বিক্রেতা ও ভক্ত দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সোমবার থেকে চৈত্র-সংক্রান্তি উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী বসেছে মেলা।

প্রতি বছর চৈত্র-সংক্রান্তির দিনে হিন্দু ও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজনের পূজা অর্চনার পাশাপাশি এ মেলা বসে। মেলাতে কাঠের আসবাবপত্র, কৃষি ও গৃহস্থালি দ্রব্যাদি, মিষ্টি আলু, তুলা, হলুদ, রকমারি মিষ্টি ও মৌসুমী ফলসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রিতে জেলার ক্রেতা বিক্রেতা ও পূজারীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।

জানা যায়, জেলার বিরামপুর এলাকার তৎকালিন রাজা ভৈরব চন্দ্র বাংলা ১১১১ সালে মেলাটি চালু করেন। শহরের ২ কিলোমিটার দক্ষিণে বিরামপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের নিকটবর্তী মির্জাপুর এলাকায় রাজা ভৈরব চন্দ্রের জামলেশ্বর কাচারি ছিল। সেই কাচারিতে এলাকার প্রজাদের খাজনা আদায় করা হতো। রাজা তার প্রজাদের সুখ-শান্তির লক্ষ্যে কাচারির ৫০ ফুট উঁচু টিলার উপর বাংলা ১১১১ সালে শিবমন্দিরটি নির্মাণ করেন। সেখানে ৫ ফুট দীর্ঘ শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করে বাংলা বছরের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র-সংক্রান্তির দিনে পূজার প্রচলন করেন।

প্রজাদের আগমনে পূজার দিনটি মেলায় রূপান্তর ঘটে এবং কালক্রমে এক দিনের মেলাটির স্থায়িত্ব হয় সপ্তাহব্যাপী। এই মেলা ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে।

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবেশ চন্দ্র কুণ্ডু জাগো নিউজকে জানান, মেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিরামপুর থানা পুলিশ, আনসার ভিডিপি ও মেলা কমিটির স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে মেলা সম্পন্ন হয়।

তিনি আরও জানান, মন্দিরের নামে অনেক জমি থাকলেও প্রভাবশালীরা বেশ কিছু জমি জবর দখল করে নিয়েছেন। মন্দিরটির অবস্থান মনোরম পরিবেশে হওয়ায় এর সীমানা প্রাচীর ও সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা করা হলে এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয়তা পাবে। আর এই কেন্দ্র চালু হলে এলাকার মানুষ নতুন করে ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ পাবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে।

এমজেড/ এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।