অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে, সাজা পেলেন দুই চাচা
রাজশাহীর বাঘায় দুই মেয়ে ও স্ত্রীর সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ থামেনি পাষণ্ড ইউনুস আলীর। শনিবার সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে চাকিপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তিনি।
তবে ইউনুস আলীর দুই ভাই আমান আলী ও আখের আলীকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পরে তাদের তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুল ইসলাম এ দণ্ডাদেশ দেন। তিনি বলেন, গণউপদ্রবকারি হিসেবে ২৯১ ধারায় তাদের প্রত্যেককে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পলাতক ইউনুস আলীর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, তিন বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ইউনুস আলী। এরপর থেকেই প্রথম স্ত্রী রওশন আরা এবং দুই মেয়ে রাবেয়া খাতুন (১৭) ও সাবিহা খাতুনের (১৫) প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ শুরু করেন।
রাবেয়া খাতুন এবার উপজেলার মোজাহার হোসেন মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইসএসসি পাশ করেছেন। এর আগে এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পান তিনি। আর ছোট বোন সাবিহা খাতুন বাঘা ইসলামী একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
সম্প্রতি পড়া লেখা বন্ধ করে দিয়ে দুই মেয়ের বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইউনুস আলী। এর আগে তাদের ভরণপোষণও বন্ধ করে দেন। এসব কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিচ্ছেলেন তার ভাইসহ পরিবারের অন্যরা।
এনিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আবেগঘন চিঠি লেখেন ওই দুই বোন। চিঠি পেয়ে তাদের বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অভিযোগ নেন থানা পুলিশও। ঘটনার পর বাড়ি থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত ইউনুস আলী। বেড়ে যায় তার অত্যাচারের মাত্রা।
বাঘা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ধীরেন্দ্রনাথ প্রামানিক জানান, বারবার সতর্ক করেও ইউনুস আলী সংশোধন হননি। উল্টো প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা তার এ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তাদের ১০ জনের নামে গত সপ্তাহে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি আরো জানান, শনিবার আবারো প্রথম স্ত্রী ও দুই মেয়ের ওপর চড়াও হন ইউনুস আলী। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাকিব হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে তার আগেই আবারো পালিয়ে যান ইউনুস আলী।
পরে স্থানীয়দের দেয়া সাক্ষ্যে ইউনুস আলীর দুই ভাই আরমান আলী ও আখের আলীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ দণ্ড দেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/আরআইপি