কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা চাঙ্গার সম্ভাবনা
সরকারি বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-কক্সবাজার রুটের ফ্লাইট চালু হওয়ায় সেখানকার বিমান ও পর্যটন ব্যবসা আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্রে জানা য়ায়, বিগত ২০১২ সালের জুন থেকে কক্সবাজার-ঢাকা রুটে ৩ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ছিল। এই সুযোগে ৪টি বেসরকারি কোম্পানি (ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, বেস্ট এয়ার, রিজ্যান্ট, ইউএস-বাংলা) বিমান চলাচল করে। যাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও পুরাতন বিমান দিয়ে নিম্নমানের সেবা দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এর ফলে কক্সবাজার-ঢাকা রুটে বিমান যাত্রী আশংকাজনকভাবে কমে যায়। যার ফলে কয়েকটি বেসরকারি বিমান লোকসানের কারণে বন্ধও হয়ে যায়। তবে দেরিতে হলেও বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট এ রুটে আবার চালু হওয়ায় সাধুবাদ জানিয়েছে স্থানীয় ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
বিমানের বিপণন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অভ্যন্তরীণ রুটগুলোর মধ্যে ৭৪ আসনবিশিষ্ট বাংলাদেশ বিমান ঢাকা-কক্সবাজার রুটে সপ্তাহে ৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তবে বিমান চলাচল প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে এসব রুটে আগামী এক সপ্তাহের টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া আগামী এক মাসের বুকিংও শেষ। জানা গেছে, বিমানের ভাড়া বেসরকারি এয়ারলাইন্সের তুলনায় অনেক কম।
বিমানের বিক্রয় বিভাগ জানায়, ওয়ানওয়ের জন্য ঢাকা-কক্সবাজার ৫ হাজার ৫০০,চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ২ হাজার ২০০ টাকা। সব ভাড়াই একবার ভ্রমণ এবং শুল্কসহ নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে টানা তিন মাসের হরতাল-অবরোধে বিপর্যস্ত কক্সবাজারের পর্যটন খাতের ক্রান্তিলগ্নে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে বিমানের আগমনে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন পর্যটন খাতের উদ্যোক্তারা। সাধারণত শীতকাল পর্যটনের প্রধান মৌসুম। গত তিন বছর ধরে এ মৌসুমে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। শুধু চলতি মৌসুমেই পর্যটন খাতের ক্ষতি হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক)।
টোয়াক এর সভাপতি কিবরিয়া জানায়, ঢাকা থেকে কক্সবাজারে সড়কপথে যেতে পর্যটকদের যে ধকল পোহাতে হয় তাতে কম খরচে বিমানে যেতে দেশি-বিদেশি পর্যটক আরো উৎসাহী হবে। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর ভাড়া অনেক বেশি। ঢাকা-কক্সবাজারে রিটার্ন ভাড়া ১৫-১৬ হাজার টাকা দিয়ে নেপাল চলে যাওয়া যায়। বিমানের আরো আগে আসা উচিত ছিল। বিমান যে সময় অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করছে তখন পর্যটন মৌসুম শেষ। ইতোমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। বিদেশিরা এই সময়টাতে কক্সবাজারে আসতে চায় না। বিমানের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক না। তারা যে কাজটা এখন করছে তা যদি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে করত তাহলে বিমানের ব্যবসা আরো টেকসই হতো।
এদিকে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের স্থানীয় কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, কক্সবাজার-ঢাকা রুটে কম ভাড়ায় বাংলাদেশ বিমান পুনরায় চালু হওয়ায় তাদের যাত্রী সংখ্যা প্রথম দিন থেকেই কমতে শুরু করেছে। তবে অফ সিজনে কিছুটা সমস্যা হলেও পর্যটন মৌসুমে যাত্রী পাওয়া তেমন সমস্যা হবে না।
এসএস/এআরএস/এমএস