ভাগবাটোয়ারা নিয়ে শিক্ষকদের মারামারি


প্রকাশিত: ০৪:০০ পিএম, ০৬ এপ্রিল ২০১৫

কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুরে এসএসসি’র ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর বেশি দেয়ার কথা বলে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করা হয়। এই অবৈধ অর্থের ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

ওই ঘটনাকে নিয়ে প্রথমে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারি প্রধান শিক্ষকের তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে প্রধান শিক্ষকের স্বজনরা রাজীবপুর বাজারে প্রকাশ্যে সহকারি প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিক্ষককে মারপিট করে মারাত্মক জখম করেন।

সোমবার সকাল ১১টার দিকে রাজীবপুর উপজেলার থানামোড় চত্ত্বরে ওই ঘটনাটি ঘটেছে। মারামারির ঘটনায় ফাঁস হয়ে যায় অবৈধ অর্থ আদায়ের বিষয়টি।

অভিযোগে জানা যায়, রাজীবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারিক পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের জন্য দুইশত পরীক্ষার্থী প্রতি এক হাজার করে প্রায় ২লাখ টাকা আদায় করে প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর। এ কারণে ব্যবহারিক পরীক্ষায় প্রকাশ্যে নকলের সহযোগিতা করে শিক্ষকরা। পরীক্ষা শেষে আদায় করা ওই টাকা ভগাভাগি নিয়ে ৪এপ্রিল ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অন্যান্য শিক্ষকদের ঝগড়া এমনকি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে প্রধান শিক্ষকের স্বজনরা সোমবার রাজীবপুর বাজারে সহকারি প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান লিটন ও সহকারি শিক্ষক তাজুল ইসলামকে মারপিট করে হাসপাতালে পাঠান।

আহত সহকারি প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান লিটন অভিযোগ করে জাগো নিউজকে বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ লাক্ষ টাকা আদায় করে প্রধান শিক্ষক। কিন্তু ওই টাকার ভাগ কাউকে না দিয়ে তিনি একাই আত্মসাৎ করেন। আমি অন্যান্য শিক্ষকদেরও কিছু করে টাকা দেওয়ার কথা বললে প্রধান শিক্ষক আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

সহকারি শিক্ষক (কম্পিউটার বিষয়ের) তাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছেন। আমার বিষয়ে পরীক্ষায় আমাকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষকের ভাইরা লাঠিশোটা নিয়ে বাজারে হঠাৎ করেই আমাদের দুইজনের ওপর হামলা করেন।’

ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর পাল্টা অভিযোগ করে সহকারি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সহকারি শিক্ষক পরীক্ষা কেন্দ্রেই আমার ওপর হাত তুলেছেন। এরপর কি হয়েছে তা আমার জানা নেই।’

নম্বর বেশি দেওয়ার কথা বলে পরীক্ষার্থী প্রতি অর্থ আদায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাকা আদায়ের বিষয়টি তো সবাই জানেন। এটাতো সব পরীক্ষা কেন্দ্রেই উঠানো হয়। আমি টাকা আদায় করিনি। সহকারি শিক্ষকরাই ওই টাকা তুলেছেন।’

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রশীদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ওই ঘটনায় প্রধান শিক্ষককের জবাব চাওয়া হবে। এ নিয়ে পরিচালনা কমিটির জরুরি সভা আহবান করা হয়েছে।’

এঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আমিও পেয়েছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়টি জানতে পারলাম পরে। এখন তো পরীক্ষা শেষ। তারপরও বিষয়টির তদন্ত করা হবে।’

এমজেড/আরআইপি
                    

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।