মই দিয়ে যাতায়াত একটি পরিবারের!


প্রকাশিত: ১১:২০ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. নুরুল হক ও তার ছেলের বিরুদ্ধে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে বাড়ি থেকে উৎখাত চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এতে অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ গোলাদারের পরিবার।

খুলনার পাইকগাছা পৌর আওয়ামী লীগের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ গোলদারের ছেলে আসাদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে জানান, এমপি নুরুল হক যে জমি দখলে নিয়েছেন তা খাস জমি। ওই জমির মালিক জেলা প্রশাসক। যারা দখলে দিয়েছে তারা পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন এমপির কাছ থেকে। কিন্তু ছেলের নামে নেয়া সেই পাওয়ার রেজিস্ট্রি করতে পারেননি এমপি। সম্পূর্ণ শক্তির জোরে তিনি জমি বুঝে পেতে আব্দুল আজিজ গোলদারের বসত বাড়ি দখল করছেন।

khulna

আসাদুল ইসলাম আরও জানান, ১৯৪৬ সালে হিন্দুদের কাছ থেকে জমিটি কিনেছিল তার দাদা। এরপর বাবা ও চাচারা ৬৬ শতক জমি কেনেন। সেই সময় থেকেই তারা জমি ভোগ দখল করে আসছেন। পরে ৪৬ শতক বিক্রি করে দেন। বর্তমানে রয়েছে ২০ শতক। তাদের বাড়ির সঙ্গেই রয়েছে খাস জমি। দেশ ভাগের সময় অজিত হালদার ও ঠাকুর দাস হালদারের দাদা ও বাবারা এই জমি ফেলে চলে যান।

পরবর্তীতে তাদের জমি খাসে পারিণত হয়। দেশ স্বাধীনের পর অজিত হালদার ও ঠাকুর দাস হালদাররা ফিরে এসে জমি উদ্ধারের জন্য সিভিল মামলা করেও জমি উদ্ধার করতে পারেননি। রায় পায় সরকার। এ রকম পরিস্থিতিতে অজিত হালদার ও ঠাকুর দাস হালদার তাদের জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে যান এমপি নুরুল হকের ছেলের নামে।

khulna

তিনি বলেন, এমপি নুরুল হকের ছেলের নামে যে জমির পাওয়ার নেয়া হয়েছে সেই জমি ২০ শতক ভোগ করছেন বিশ্বনাথ দাস, রবিণ কুমার দাস, মোফাজ্জেল সরদার, ডা. মনোরঞ্জন রায়। কিন্তু হিন্দুদের জমি দখল করলে বদনাম হবে। সবাই ক্ষেপে যাবে এই ভয়ে আব্দুল আজিজ গোলদারের জমি দখল করে নিয়েছেন এমপি।

এই বিষয়ে দুইটি মামলাও তারা করেছেন। দুইটি মামলাতেই স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে শেখ মনিরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় এমপি শেখ নুরুল হকের পরিবারও পাল্টা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সত্তর বছর ধরে মো. আজিজের পরিবার ক্রয়সূত্রে ওই জমিতে বসবাস করছে। ওই জমির পাশের অর্পিত সম্পত্তির ৫০ শতাংশ স্থানীয় এমপির ছেলের নামে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করে লিজ নেয়ার পর শুরু হয় জমি নিয়ে বিরোধ।

khulna

পাওয়ার নেয়া জমি মেপে দেখা যায় ৩০ শতাংশ আছে। ফলে তারা দাবি করছে-আজিজের বসতবাড়ির ২০ শতাংশ তাদের। এরপর তারা প্রাচীর তুলে দেয়। ওই দেয়াল ১০ ফুটের মত উঁচু বলে জানান তিনি। তবে এই জমিতে আজিজের পরিবার নিয়মিত খাজনা দেওয়া-সহ জমির আনুষঙ্গিক কাজকর্ম করে আসছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এই বিষয়ে কথা বলার জন্য এমপি অ্যাডভোকেট শেখ নুরুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আলমগীর হান্নান/এআরএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।