চাঁদপুরে পুত্র চেয়ারম্যানের হাতে পিতার মৃত্যু!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ০৩ এপ্রিল ২০১৫

চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের মারধরের শিকার হয়ে ৫ দিন পর মারা গেলেন তার পিতা আব্দুল মতিন (৮১)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ঠাকুরবাজারের শাহরাস্তি টাওয়ার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুল মতিন মৃত্যুবরণ করেন ।

মরহুমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২৮ মার্চ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তার তার পিতাকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৯ মার্চ বিকেল ৩টায় তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়িতে নেয়ার পরও তিনি শারীরিক অসুস্থতা বোধ করেন। পরে বৃহস্পতিবার ২ এপ্রিল তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দ্রুত শাহরাস্তি টাওয়ার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে রাতে তার মৃত্যু হয়।

শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে জানাজা শেষে তাকে পরিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের ভাই মাহবুবু আলম বলেন, গত ২৮ মার্চ শনিবার দুপুর পৌনে ১টায় উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের বেরকী গ্রামের জয়নাল আবেদীনকে (৬০) তুচ্ছ ঘটনায় চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার রাস্তার উপর পেটাতে থাকেন। ঐ সময় তার বাবা আব্দুল মতিন বাড়ি থেকে বের হন। জয়নালকে মারতে দেখে ছেলে আব্দুস সাত্তারকে মারধর করতে নিষেধ করেন বাবা। বাবা এক পর্যায়ে ভাই আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে নিতে চাইলে বাবার গলা টিপে ধরে উপর্যুপরি কিল, ঘুষি, লাথি মেরে রাস্তার উপর ফেলে দেন। পরে বাবার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তাকে। ওইসময় বাবা আব্দুল মতিনের নাক ফেটে যায় এবং হাতের ডানায়, বুকে, পিঠে ও পায়ে  জখম হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানায়, বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে স্ত্রী, পুত্র, এলাকার বয়োবৃদ্ধ, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও নিজ পিতাকে বহুবার মারধরের অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, এসএসসি পরীক্ষার ছাত্রী নিয়ে পলায়ন, স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর ঝাড়ু মিছিল, স্থানীয় জনতা কর্তৃক বেশ কয়েকবার গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে আদালতে বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুলাই মাসেও এই চেয়ারম্যান তুচ্ছ ঘটনায় তার পিতাকে বেদম মারধর করেছিলেন।

এ বিষয়ে শাহরাস্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হোসেন মামুন বলেন, চেয়ারম্যানের মারধরে তার পিতা মারা গেছেন জেনেছি। তবে এখনও তার পরিবারের পক্ষে থেকে অভিযোগ করেনি কেউ।

ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, বাবা হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মারা যান। বাবাকে মারধরের বিষটি অস্বীকার করেন তিনি।

এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।