চার মাস পর প্রসূতির পেট থেকে গজ-ব্যান্ডেজ অপসারণ!
যশোরে এক প্রসূতির পেটে চিকিৎসকের রেখে দেয়া গজ-ব্যান্ডেজ অপসারণ করা হলো চার মাস পর। ঘটনার শিকার মাফিজা খাতুন (২৫) যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের স্ত্রী। প্রায় চার মাস আগে চৌগাছায় পল্লবী ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনকালে তার পেটের মধ্যে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে দেন চিকিৎসক। বুধবার সন্ধ্যায় ফের অপারেশন করে এই গজ-ব্যান্ডেজ অপসারণ করা হয়।
মাফিজা খাতুন বর্তমানে যশোর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে পল্লবী ক্লিনিকের মালিক মিজানুর রহমান দাবি করেছেন, সিজারিয়ানের পর রোগীর শরীরে ইনফেশন হয়েছিল। তবে তার পেটের মধ্যে গজ-ব্যান্ডেজ ছিল কি-না আমাদের জানা নেই।
মাফিজা খাতুনের দেবর মফিজুর রহমান জানান, গত ৭ অক্টোবর তার ভাবি মাফিজা খাতুনকে সন্তান ডেলিভারি (প্রসব) করানোর জন্য চৌগাছার পল্লবী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিকের চিকিৎসক নুুরুন নবী সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সিজারিয়ান অপারেশনের পর রোগীর পেটের ভেতর গজ-ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক। অপারেশনের ২১ দিন পর রোগীর শরীরে ইনফেকশন হয়। এরপর ক্লিনিকে নিয়ে মালিককে দেখানো হয়।
তিনি দেখে বলেন, ইনফেকশন হয়েছে। এরপর ক্লিনিকের মালিক মিজানুর রহমান রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সেই ওষুধেও কোনো উপশম না হওয়া স্বজনরা মাফিজাকে আবারও ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেই সময় বিভিন্ন পরীক্ষা করিয়ে পেটে টিউমার পাওয়া গেছে বলে স্বজনদের জানানো হয়। পরে যশোরের একটি ক্লিনিকে এনে বুধবার সন্ধ্যায় পুনরায় অপারেশন করানো হয়। অপারেশনের সময় রোগীর পেটের ভেতর থেকে গজ-ব্যান্ডেজ অপসারণ করা হয়।
যশোর শহরের নূর মহল ক্লিনিকের চিকিৎসক মোজাম্মেল হক জানান, মুমূর্ষু অবস্থায় স্বজনরা রোগীকে তার কাছে নিয়ে আসেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় তার পেটের ভেতর গজ-ব্যান্ডেজ রয়েছে। পরে সন্ধ্যায় পুনরায় অপারেশন করে পেটের গজ-ব্যান্ডেজ অপসারণ করা হয়েছে। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছে।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত চৌগাছার পল্লবী ক্লিনিকের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, আমার ক্লিনিকে রোগীর সিজার করা হয়। কিছুদিন তার শরীরে ইনফেশন হয়েছিল। ড্রেসিং করে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি। তবে রোগীর পেটের মধ্যে গজ-ব্যান্ডেজ ছিল কি-না আমাদের জানা নেই।
মিলন রহমান/বিএ