হাইকোর্টের রায় অমান্য করে চলছে নসিমন-করিমন
মহাসড়কে নসিমন-করিমন (ইঞ্জিনচালিত ভ্যান) বন্ধে হাইকোর্টের রায়ের পর যশোরাঞ্চলে তা চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এই অঞ্চলের ১৮টি রুটে চলাচল করছে প্রায় ৫ হাজার নসিমন, করিমন, ভটভটি ও আলমসাধু।
অবৈধ এ বাহনগুলো প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় মিলিয়ে ১০-১৫টি দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি প্রাণহানিও ঘটছে। যদিও বিআরটিএ হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, যশোর অঞ্চলের ছোট বড় মিলিয়ে ১৮টি রুটে প্রায় ৫ হাজার নসিমন, করিমন, ভটভটি, আলমসাধু ইত্যাদি চলাচল করছে। তিন চাকাবিশিষ্ট ট্যাক্সি বা ভ্যানের বডির সঙ্গে স্যালোমেশিনের ইঞ্জিন ব্যবহার করে তৈরি করা হয় এ বাহন।
বিভিন্ন রুটসহ গ্রামাঞ্চলে যাত্রী পরিবহন এবং মালামাল বহনে নসিমন, করিমনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই গাড়িগুলোর কোনো ফিটনেস নেই।
ফলে বেপরোয়া গতিতে এগুলো ছুটে চলে। অহরহ ঘটায় দুর্ঘটনা। এই অঞ্চলের বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন নসিমন ও করিমনের কারণে গড়ে অন্তত ১০ থেকে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটছে।
এতে আহত হওয়া ছাড়াও প্রায় প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটছে। আবার সর্বত্র ঘুরে বেড়ানো এ বাহনগুলো মাঝে মধ্যেই রাস্তর ওপর বিকল হয়ে পড়ে। এতে দুর্ঘটনা ছাড়াও রাস্তায় সৃষ্টি হয় যানজট।
এসব কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মহাসড়কে স্যালোইঞ্জিনচালিত এ বাহনগুলো চলাচল নিষিদ্ধ করে তিনবছর আগে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয় হাইকোর্ট। বুধবার চূড়ান্ত রায়ে চার দফা নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্ট মহাসড়কে এ যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে।
তবে এ রায়ের পরদিনও যশোরের বিভিন্ন মহাসড়কে নসিমন করিমন চলাচল করতে দেখা গেছে। যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-মাগুরা, যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোল ও যশোর-নড়াইল সড়কে নসিমন করিমনের যাতায়াত ছিল অন্য দিনগুলোর মতই।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে নসিমন নিয়ে চলা সদর উপজেলার মাহিদিয়া এলাকার মালেক মিয়া জানান, নসিমনে মালামাল নিয়ে তার সংসার চলে। তাই প্রতিদিনের মত আজও গাড়ি নিয়ে রাস্তায় এসেছেন। হাইকোর্টের রায় তিনি জানেন না। তবে পুলিশ মাঝে মধ্যেই ঝামেলা করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রূপদিয়া এলাকার আরেক নসিমন চালক আবদুর রহিম বলেন, ‘এসব রায় টায় হলে পুলিশ কিছুদিন খুব ধরপাকড় করে। তখন ঘুষ-টুষ দিয়ে চলতে হয়। কয়েকদিন গেলে আবার সব ঠিক হয়ে যায়।’
আদালতের রায়ের নির্দেশনা প্রসঙ্গে বিআরটিএ খুলনা বিভাগের উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান জানান, যদিও আদালতের রায়ের নির্দেশনা এখনও তারা হাতে পাননি, তবে এরই মধ্যে তারা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এ নিয়ে বিআরটিএ’র প্রধান কার্যালয়ে সভা হয়েছে। সভা থেকে এই রায় দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জিয়াউর রহমান আরও জানান, মহাসড়কে নসিমন করিমনসহ অবৈধ সব যানবাহনের ব্যাপারেই তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি সব ধরনের আইনগত পদক্ষেপ আরও জোরদার করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মিলন রহমান/এএম