কুয়াকাটায় শুটকির সম্ভাবনা


প্রকাশিত: ০৫:০৪ এএম, ২০ জানুয়ারি ২০১৭

কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে শুকিয়ে বাজারজাত করা হয় কুয়াকাটার শুটকি। প্রাকৃতিকভাবে শুকানোর ফলে এর রয়েছে আলাদা স্বাদ। কুয়াকাটায় আসা পর্যটক-দর্শনার্থীদের কাছে প্রতিদিন শতাধিক কেজি শুটকি বিক্রির সুযোগ রয়েছে।

কিন্তু ১২ মাস শুটকির চাহিদা থাকলেও নেই কোনো স্থায়ী পল্লী। স্থায়ীভাবে সরকারি উদ্যোগে শুটকি পল্লীর জন্য স্টল ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা করলে এখানকার শুটকি উন্নত বিশ্বে রফতানি করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
 
জানা গেছে, কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিমদিকে মাঝিবাড়ি, খাজুরা ছাড়াও খালগোড়া, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর ধুলাসারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শুটকির ব্যবসা। মৌসুমের শুরুতেই একেকটি স্পটে ১০-১২ জন ব্যবসায়ী ছোট্ট ঝুপড়িতে শুটকি তৈরি করেন। কার্তিক মাসে শুরু করে ব্যবসা চলে পুরো ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। বর্ষায় বন্ধ হয় এ ব্যবসা।

Shutki

ঝুপড়ি সংলগ্ন মাছ শুকানোর বাঁশের মাচান বানানো, জাল-নৌকা কেনা এবং দাদন নিয়ে একেক জন ব্যবসায়ী অন্তত দশ লাখ টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু করেন এ ব্যবসা। সাধারণত লইট্টা, ফাহা, ফালিসা, চাবল, কোরাল, হাঙ্গর, ছুরি, পোমা, চান্দাকাটা, চিংড়ি, লাক্ষ্মা, গোলপাতা, নোনা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের শুটকি করা হয় কুয়াকাটা ও তার আশপাশের চরগুলোতে।

দেখা গেছে, কুয়াকাটা মূল সৈকতের পশ্চিমে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরেই রয়েছে একটি শুটকি পল্লী। সাতজন ব্যবসায়ী বাসা করেছেন। কেউ মাছ আহরণ শেষে ধোয়ার কাজ করছেন। কেউ বড় মাছ কাটছেন। লবন মিশিয়ে মাচানের উপরে বিছিয়ে শুকানোর কাজ চলছে। কেউবা শুকানো শুটকি বস্তায় ভরছেন। পরে সংলগ্ন বাসায় সংরক্ষণ করে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মোকামে চালান করা হয় শুটকি।

Shutki

ব্যবসায়ী কালাম জানান, মৌসুমের শুরুতে প্রচুর মাছ পাওয়া গেছে, এখন আকাল চলছে।

ব্যবসায়ী ইদ্রিস জানান, শুটকিতে কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহৃত হয় না। প্রাকৃতিকভাবে রোদে শুকিয়ে পরিচ্ছন্নতার মধ্য দিয়ে শুটকি করা হয়।

ব্যবসায়ী ইউসুফ খলিফা বলেন, আমাগো যদি স্থায়ীভাবে সরকারি শুটকি পল্লী ও বিক্রয়ের জন্য স্টল করে বাজার করে দেয়া হয় ও ব্যাংক থেকে সল্প সুদে পর্যাপ্ত ঋণের ব্যবস্থা করে তবে এ পেশা ধরে রাখা সম্ভবা। নয়তো এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনশ পরিবার টিকে থাকতে পারবে না।

Shutki

পটুয়াখালী দি চেম্বর অব-কর্মাস ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শুটকি পল্লী থাকলেও নেই কোনো প্রতিষ্ঠানিক রুপ। সরকারি উদ্যোগে স্থায়ীভাবে শুটকি পল্লী ও বিক্রয়ের জন্য স্টল করে দিলে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা করলে তবেই এখান থেকে শুটকি উন্নত বিশ্বে রফতানি করা সম্ভব।
 
এ ব্যাপারে কুয়াকাটা পৌর সভার মেয়র বারেক মোল্লা বলেন, ইতোমধ্যে শুটকি ব্যসায়ীদের নিজস্ব পল্লী এবং শুটকি বিক্রির নির্দিষ্ট বাজারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।