শিক্ষার্থী নেই তবুও বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি
কাগজে-কলমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। একটি মাত্র টিনের খোলা ঘর। ঘরে ঝোলানো সাইনবোর্ড। যাতে লেখা আছে ‘রহিমা নগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। তবে কোনো শিক্ষার্থীর দেখা মেলেনি এ বিদ্যালয়ে। বলা যায় বিদ্যালয় আছে কিন্তু শিক্ষার্থী নেই। তবুও বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের দাবি তুলছেন সংশ্লিষ্টরা।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের রহিমানগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের ‘জাতীয়করণের’ পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামীতে তৃতীয় ধাপে ‘জাতীয়করণের’ সুযোগ নিতেই দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন পাটগ্রামের ওই স্কুলের সংশ্লিষ্ট পরিচালনা কমিটিসহ শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৩ সালের ৫ অক্টোবর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নামে প্রায় ৩৫ শতক জমি দান করেন ওই এলাকার আব্দুল হামিদ খন্দকার। এরপর একটি টিনের ঘর করে তাতে রহিমা নগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড টাঙানো হয়। নিয়োগ দেয়া হয় চার জন শিক্ষককে। কিন্তু স্কুলের কার্যক্রম না থাকায় তাদের অনেকেই চলে যান।
পরববর্তী ওই এলাকার আব্দুল হামিদ খন্দকারের ছেলের বউ ও এক মেয়েকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আর স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান হামিদুল হক খন্দকারের বড় ছেলে ও জোংড়া ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক হুমায়ুন কবির খন্দকার রাজু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাগজে-কলমে ১৯৯৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও গত ২৪ বছরের এক দিনও সেখানে কোনো প্রকার পাঠদান হয়নি। এরপরেও বর্তমানে অস্তিত্বহীন স্কুলটিকে জাতীয়করণের পাঁয়তারা চলছে বলেও অভিযোগ গ্রামবাসীর।
এ বিষয়ে কথা হয় স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির খন্দকার রাজুর সঙ্গে। অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও জাতীয়করণের পাঁয়তারা সম্পর্কে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
পাটগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফিরোজুল আলম বলেন, ওই স্কুলটি আমাদের তালিকায় নেই।
পাটগ্রাম উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-কুতুবুল আলম বলেন, ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর তা বসে সমাধান করা হয়েছে। তবে এখনও স্কুলটি জাতীয়করণের জন্য কোনো প্রকার সুপারিশ করা হয়নি।
রবিউল হাসান/এএম/এমএস