খাদিজা না আসায় বদরুলের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি


প্রকাশিত: ১২:৪৬ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৭

কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস সিলেটের আদালতে হাজির না হওয়ায় তাকে হত্যাচেষ্টা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি খাদিজাকে আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য বিচারিক হাকিম। আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রোববার মামলার আসামি বদরুলের উপস্থিতিতে খাদিজার সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু খাদিজা আদালতে উপস্থিত হওয়ার মতো সুস্থ না থাকায় তার পক্ষে আদালতে হাজির হওয়ার সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি।

খাদিজা বর্তমানে সাভারের পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানকার চিকিৎসক ডা. সাঈদ আহমদ জানান, খাদিজার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার দিকে চিন্তা করে আদালতে নিকট আরও এক মাসের সময়ের আবেদন জানানো হয়েছে।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুসের মাধ্যমে এ আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

চিকিৎসক আরও জানান, খাদিজাকে প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে থেরাপি দেয়া হয়। এ অবস্থায় তাকে আদালতে হাজির করা যাবে না। এছাড়া সাক্ষ্য দেয়ার মতো যে মানসিকতা প্রয়োজন, তা এখনো বিবেচনাধীন।

গত ১৫ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার ভিকটিম খাদিজা আক্তার নার্গিসকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। এর আগেও খাদিজাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিলে চিকিৎসকের ছাড়পত্র না পাওয়ায় তাকে হাজির করা হয়নি।

ইতোমধ্যে মামলার ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে ৩৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাদিজার ওপর হামলার পর মামলা হওয়ার একমাস পাঁচ দিনের মাথায় মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার উপ-পরিদর্শক হারুনুর রশিদ গত ৮ নভেম্বর বদরুলকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। ১৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোপত্রের শুনানি শেষে তা গৃহীত হয়।

গত ৩ অক্টোবর এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে বদরুল আলম। হামলার পরপর বদরুলকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন শিক্ষার্থীরা।
    
অভিযুক্ত বদরুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মনিজ্ঞাতি গ্রামে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বদরুলকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

গত ৪ অক্টোবর এ ঘটনায় মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস। দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে সরকারের উচ্চ মহল থেকেও বদরুলের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করে শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দেয়া হয়।

খাদিজাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রামে খাদিজার বাড়ি। তার বাবা মাসুক মিয়া সৌদিপ্রবাসী।

স্কয়ার হাসপাতালে ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ১৩ অক্টোবর খাদিজার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়। খাদিজার অবস্থা এখন উন্নতির পথে। সরকারের পক্ষ থেকে খাদিজার চিকিৎসার ব্যয় বহন করা হচ্ছে।

গত ২৮ নভেম্বর খাদিজাকে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে সাভারের সিআরপিতে ফিজিওথেরাপি দেয়ার জন্য হস্তান্তর করা হয়।

ছামির মাহমুদ/এএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।