পুলিশ সোর্সরাই জড়িয়ে পড়ছেন মাদক বিক্রিতে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সোর্সরাই জড়িয়ে পড়ছেন মাদক বিক্রির সঙ্গে। মাদক বিক্রেতাদের ধরিয়ে দিতে গিয়ে তাদের সঙ্গে গোপন আতাঁতের মাধ্যমে নিজেই হয়ে উঠছেন মাদক বিক্রেতা। আর এতে সহযোগিতা করছে থানার কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য।
জানা যায়, উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় মাদকের সয়লাব থাকলেও থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নামে মাত্র মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার দেখানো ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করা হচ্ছে। তাতে বেশিরভাগ মাদক বিক্রেতা তথ্যের অভাবে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এতে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না বলে ধারণা করছে প্রশাসন।
এদিকে স্থানীয় সোর্সরাই জড়িয়ে পড়ছেন মাদক বিক্রির সঙ্গে। এমনই চিত্র পাওয়া গেছে উপজেলার বাড়িয়া ছনি, গুতিয়াব, পিতলগঞ্জ, মধূখালী, বাগবের ও টিনর এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছনি এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর ও তার ভাই আশিকুর রহমান আশি, একই এলাকার মমিন মিয়া, হামিদ মিয়ার ছেলে রাজু, টিনর এলাকার মজির উদ্দিন ও মাইনদ্দিন, বাগবের এলাকার শফিকুর রহমান শফি, রুহুল আমীন, গুতিয়াব আগার পাড়ার তারাজুদ্দিনের ছেলে বাচ্ছু মিয়া, জুয়ারী আলমাছ, মাদক সম্রাট আওলাদ, ভক্তবাড়ি এলাকার নিজামুদ্দিন, হিরন, ফিরুজ মিয়া, দুলাল মিয়া, খেসাইর এলাকার লিখন, ব্রাহ্মণখালীর শরীফ, পিংলাইনের আনোয়ার হোসেনসহ বেশ কিছু সোর্স এখন চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত।
তাদের কাছে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিলসহ আমদানি নিষিদ্ধ বিয়ার ও মদ। তাদের অধীনে রয়েছে একাধিক চোরাই মদের কারখানাও।
সূত্র জানায়, তারা শুরু থেকেই মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকায় একাধিকবার পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হন। সেখান থেকেই পুলিশের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে হয়ে ওঠেন পুলিশের সোর্স। তবে আইনের ফাঁকে বেরিয়ে এসেই শুরু করেন তাদের পুরোনো পেশা।
তবে সঙ্গে যোগ করেন পুলিশের সোর্স হিসেবে বাড়তি ক্ষমতা। আর এই ক্ষমতাবলে নিরীহদের মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে, জমি বিক্রেতার টাকা খোয়ানোর কৌশলে ও স্থানীয় মাদকসেবীকেও মাদক বিক্রেতা সাজিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়াসহ নানা অপকর্ম চালান। তাদের রয়েছে একাধিক জুয়ার মাঠও।
অন্যদিকে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা, হপ্তা ইত্যাদি আদায় করে নিজের ভাগেরটা রেখে অসাদু পুলিশ সদস্যকে তা প্রদান করেন। আর এভাবেই নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয় মাদক ব্যবসা।
এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ শুনেছি। রূপগঞ্জে থানা পুলিশের সকল সদস্যদের সোর্সদের দেয়া তথ্যের যাচাই বাছাই ও তারা মাদক বিক্রিতে জড়িয়ে পড়লে তাদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসব কাজে পুলিশ জড়িত থাকলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানও তিনি।
মীর আব্দুল আলী/এফএ/এমএস