দুই বছরে সুন্দরবনে ৭২ জলদস্যুর আত্মসমর্পণ
গত দুই বছরে র্যাব-৮’র হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে সুন্দরবনের আতঙ্ক ৮ জলদস্যু বাহিনী। ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে শুরু করে ২০১৭ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত অন্ধকার জগৎ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এই ৮ জলদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এসময় তারা র্যাব-৮’র হাতে জমা দিয়েছেন ১৬৪টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৮ হাজার ৬৩৬ রাউন্ড গুলি ।
২০১৬ সালের ৩১ মে মাস্টার বাহিনীর ১০ জন সদস্য ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৯০৪ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে জলদস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণ কার্যক্রম শুরু হয়।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৬টি ধাপে সর্বমোট ৮টি বাহিনীর ৭২ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে।
র্যাব-৮’র কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩১ মে মাষ্টার বাহিনীর ১০জন সদস্য ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৯০৪ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পন করে। বর্তমানে তারা সকলেই জামিনে রয়েছেন।
এর প্রায় দুই মাস পর অর্থাৎ ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই মজনু বাহিনীর ৯ জন ও ইলিয়াস বাহিনী দুইজন ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০২০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করে।
২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর শান্ত বাহিনীর ১০জন ও আলম বাহিনীর চার জলদস্যু ২০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০০৮ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করে। বর্তমানে তারা সকলেই জামিনে রয়েছেন।
২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর জলদস্যু সাগর বাহিনীর ১৩ জন সদস্য ২০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৯৬ রাউন্ড গুলিসহ র্যাব-৮’র কাছে আত্মসমর্পণ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের শেষ দিকে অর্থাৎ ২৭ নভেম্বর জলদস্যু খোকাবাবু বাহিনীর ১২ সদস্য ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০০৩ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে র্যাব-৮’র কাছে আত্মসমর্পণ করে।
সর্বশেষ শনিবার দুপুরে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু ‘নোয়া ভাই’ বাহিনীর প্রধান মো. বাকী বিল্লাহ ওরফে নোয়াসহ ১২ সদস্য ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১১০৫ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ জানান, এখনও পূর্ব সুন্দরবনে দুটি এবং পশ্চিম সুন্দরবনে ৬টি জলদস্যু গ্রুপ সক্রিয়। তারা র্যাবের নজরদারিতে রয়েছে। তাদের দ্রুত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান তিনি।
একই সঙ্গে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আশায় আত্মসমর্পণ করা সাবেক জলদস্যুরা যাতে সমাজের সঙ্গে মিলে মিশে থাকতে পারে, সে লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসনসহ জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। কেউ যদি তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বিঘ্ন ঘটায় তাহলে র্যাব তাদের ছেড়ে দেবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। নিরাপদ সুন্দরবন প্রশ্নে সরকার কাউকে ছাড় দেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন র্যাব মহাপরিচালক।
এআরএ/জেআইএম