সব শিক্ষক ‘গুরু’ নয় : আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
একজন আদর্শ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের চোখে জীবনের প্রথম নায়ক উল্লেখ করে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, যারা পড়ান তারা সবাই শিক্ষক। কিন্তু সব শিক্ষক ‘গুরু’ হয় না। যিনি শিক্ষার্থীদের জাগিয়ে তুলতে পারেন তিনিই ‘গুরু’।
রোববার কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের (কসউবি) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পাঠদান থেকে গুরু হতে পারলেই একজন শিক্ষক সারাজীবন নায়কের আসনে বসে সম্মানের পাত্র হয়ে থাকতে পারেন। এই নায়ককে অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা তার সারাটা জীবন পার করতে চেষ্টা করেন।
নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন আমি ঢাকা কলেজে পড়াই। একদিন নিজের গাড়িতে করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যাচ্ছি। সামনে পড়ে গেলো ট্রাফিক পুলিশের সিগন্যাল। গাড়ির ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদ সাতদিন আগে শেষ হয়ে যাওয়ায় আমার ভয় লাগছে। আমি অস্থিরতা অনুভব করছি। তাকিয়ে দেখি এক ট্রাফিক সার্জেন্ট দাঁড়িয়ে আছেন। এত বড় সার্জেন্ট দেশে দ্বিতীয়টি নেই। তাই ভেতরে অস্থির হলেও বাইরে স্বাভাবিক থাকার ভান ধরেছি। একদম নিশ্চিন্ত মনে আকাশ এবং প্রকৃতি দেখছি। হঠাৎ সেই বাঘা সার্জেন্ট আমার কাছে আসলেন। আমাকে দেখেই অত্যন্ত নমনীয় ভঙ্গিতে বলেন ‘স্যার আসসালামু আলাইকমু। আমি ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিলাম।’ এই হলো শিক্ষকের সম্মান।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষ করেছেন বলেই আজ আপনাদের এতগুলো ছাত্র দেশ কাঁপাতে পারছে।
পুনর্মিলনী বাস্তবায়ন কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কসউবির সাবেক ছাত্র আমেরিকা প্রবাসী ব্যারিস্টার গোলাম রফিক উদ্দীন মাহমুদ, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলাল উদ্দীন, সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ।
বক্তব্য রাখেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উলাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, বায়তুশ শরফের মহাপরিচালক সাবেক শিক্ষক এম এম সিরাজুল ইসলাম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. আলী, জেলা জাসদের সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, নূরুল হুদা চৌধুরী প্রমুখ।
পুনর্মিলনীর প্রথম অধিবেশন শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে র্যালির উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবেক ছাত্র হেলাল উদ্দীন আহমেদ।
সায়ীদ আলমগীর/এএম/আরআইপি