প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে সিলেটে উৎসবের আমেজ
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট সফর ঘিরে শহরজুড়ে চলছে সাজ সাজ রব। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
আগামী ২৩ নভেম্বর বুধবার সিলেটে যাবেন শেখ হাসিনা। ওই দিন বেলা আড়াইটায় তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে তার।
এ উপলক্ষে রোববার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মঞ্চনির্মাণ কর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনাও দেন।
এ সময় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনকে ঘিরে এরই মধ্যে পুরো শহর ছেয়ে গেছে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড আর তোরণে। দলের জাতীয় সম্মেলনে আবার সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম তিনি জনসভায় ভাষণ দেবেন।
হজরত শাহজালাল ও হজরত শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করে তিনি সফরসূচি শুরু করবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ধারণা, প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগরের বিভিন্ন মোড় ও সড়ক সাজানো হচ্ছে। সফর উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকভাবে এটিই দ্বিতীয় সফর। যদিও প্রধানমন্ত্রী এর মধ্যে বেশ কয়েকবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করে দলীয় নেতাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ১০ মাসের মাথায় একই স্থানে ভাষণ দেবেন তিনি। তবে সেবারের সফরের চেয়ে এবারের সফর ঘিরে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে প্রতিদিনই জনসভা সফলের লক্ষে চলছে সভা-সমাবেশ।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এরই মধ্যে নেতাকর্মীরা নেত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বিপুলসংখ্যক ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও তোরণ লাগিয়েছেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কোনো পদে নেই, এ রকম অনেক দাগি সন্ত্রাসীও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে নগরে বিলবোর্ড ও ফেস্টুন লাগিয়েছেন। দলের অনেক নেতাকর্মী এতে বিব্রতবোধ করছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সিলেটের মহানগর পুলিশ। ২২ নভেম্বর থেকেই সিলেটে ছয় স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ উপলক্ষে সভাও করেছে নগর পুলিশ।
সভায় রাজনীতিবিদ, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান (বিপিএম) জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণ্যমাধ্যম) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেছেন, মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ছয় স্তরের নিরাপত্তা দেয়া হবে। আজ এসএসএফের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনও। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সাতটি বড় বিলবোর্ড নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় লাগাবে সিসিক কর্তৃপক্ষ।
সিসিকের পক্ষ থেকে আলিয় মাদরাসার মাঠ প্রস্তুত করা, মাঠের চারপাশে রঙ করা, চৌহাট্টা থেকে রিকাবিবাজারে ডিভাইডারগুলোতে নতুনভাবে রঙ ও আলোকিতকরণ, নজরুল চত্বর আলোকিত ও রঙকরণ, জালালাবাদ পার্ক রঙকরণ, নগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিষ্কার, রিকাবিবাজার সড়কে ছোট ছোট খানাখন্দর ভরাট ও মাজার রোডে ডিভাইডার স্থাপন করার কাজ চলছে।
এছাড়া আজ রোববার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সিসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নগরের বিভিন্ন ফুটপাতে ভাসমান ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দিতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সিসিক কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দিন সভাস্থলে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব।
ছামির মাহমুদ/এফএ/এনএইচ/এমএস