শতবর্ষী নারীকে জিম্মি করে জমি দখল করলেন প্রতিবেশী


প্রকাশিত: ১২:৫৬ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় রাতের আঁধারে রঙমালা বেগম নামে এক শতবর্ষী নারীর পরিবারের লোকজনকে জিম্মি করে ভিটে-বাড়ি দখল করার ঘটনা ঘটেছে।

রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের মনূয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার সকালে ভেদরগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন বৃদ্ধা রঙমালা বেগমের ছেলে হবিবুর রহমান।

মামলায় দখলকারী হযরত আলী সিকদারকে (৭০) প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন ইদ্রিস আলী সিকদার (৬৫), আব্বাস আলী (৪৯), মোকলেছ আলী (৫৫) ও লিয়াকত (৫০)।

জানা যায়, মনূয়া গ্রামের বৃদ্ধা রঙমালা বেগম বিয়ের পর থেকেই বাবার কাছ থেকে পাওয়া ১১ শতক জমিতে সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। তার জমির পাশেই হযরত আলী সিকদার জমি ক্রয় করেন।

এরপর থেকেই রঙমালার সম্পত্তি দখল করার পায়তারা করেন তিনি। হযরত আলীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রঙমালার পরিবার ও প্রতিবেশীদের।  

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার রাতে হযরত আলী তার লোকজন নিয়ে রঙমালা বেগমের পরিবারের লোকজনকে জিম্মি করে আসবাবপত্রসহ ঘর ভেঙে নিয়ে যায় এবং রাতেই ওইস্থানে ২টি ঘর নির্মাণ করেন।

এ ব্যাপারে রঙমালা বেগম বলেন, আমার বাবা আমারে সাড়ে ৫ কড়া জমি দিয়া গেছে। ওই জমিতে আমার ছেলে সন্তান নিয়ে থাকি। কাল রাতে আমার জমি হযরত আলী সিকদার নিয়ে নিছে। আমি এখন কই থাকবো।

Rongmal
 
এ ঘটনায় প্রতিবেশী মাসুদা বেগম, কল্পনা বেগম, সিরাজ মোল্যা, মাহমুদা বেগম ও আলী আশরাফ মোল্যা জাগো নিউজকে বলেন, হযরত আলী সিকদার একজন ভূমিদস্যু। তিনি অনেক প্রভাবশালী। তাই কেউ তার বিরুদ্ধে লড়তে আসেন না।
 
রঙমালা বেগমের ছেলে হবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমার নানার সম্পত্তিতে আমরা থাকি। আমাদের সম্পত্তি দখল করার জন্য হযরত আলী বিভিন্ন সময় আমাকে মৃত্যুর ভয় দেখাতো। গতকাল (রোববার) রাতে আমাদের জিম্মি করে জমিতে ঘর তুলেছে। আমরা এখন পরিবার নিয়ে থাকবো কোথায়।

এ বিষয়ে হযরত আলী সিকদার বলেন, প্রতি শতক জমির দাম ৩৫ হাজার টাকা করে রঙমালা বেগমের কাছ থেকে কিনেছি। আমি এক লাখ টাকা বায়নাও দিয়েছি। এখন তারা অন্য জায়গায় সম্পত্তি বিক্রি করতে চায়। তাই আমার সম্পত্তি আমি দখল করেছি।

ভেদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, জমি দখলের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখন ঘরের কাজ বন্ধ আছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে মিমাংসার জন্য বলেছি।

এ ব্যাপারে ছয়গাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর মো. মামুন জাগো নিউজকে বলেন, হযরত আলী সিকদার জমি কিনেছে কিনা তা আমার জানা নাই। তবে দখলের ব্যাপারে অভিযোগ শুনেছি। দু’পক্ষকে বলে মীমাংসা করে দেব।

মো. ছগির হোসেন/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।