কাউকে দেখলেই বলছেন ‘আমারে কি নিতে আইছ’


প্রকাশিত: ১২:২৩ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

গাজীপুরে ফেলে যাওয়া বৃদ্ধা আমেনা খাতুনের (৯০) দায়িত্ব নিয়েছে জেলা সমাজ সেবা কর্তৃপক্ষ।

গতকাল শনিবার দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম এ বৃদ্ধা মাকে ফেলে পালিয়ে গেলেন মেয়ে-জামাই শিরোনামে সংবাদটি প্রচার হলে সমাজসেবা কর্মকর্তারা তাকে উদ্ধার করে সরকারি আশ্রয়ে নিয়ে যান।

রোববার বিকেলে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শংকর শরণ সাহা পূবাইলে গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেন। তারা বৃদ্ধাকে পূবাইলে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে রেখেছেন।
 
শংকর শরণ সাহা জানান, পত্রিকায় রিপোর্ট দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
Bagum
এর আগে সকালে পূবাইল এলাকায় গেলে অশ্রুভরা চোখে অশীতিপর বৃদ্ধা আমেনা খাতুন বলেন, ‘মরার আগে আমার স্বামী আমারে যা কিছু লেইখ্যা দিছিল এর সব নিয়া গেছে ছেলে, মেয়ে ও জামাই। আমি এখন রাস্তার ফকির। আমার অহন কি হইব।’ তার বাড়ি সাভার বলে জানান। তবে ঠিকানা বলতে পারেন না।

এক বিঘা জমি ও ৫টি ঘর মেয়ে-জামাতা মিলে লিখে নিয়ে গত ২০ দিন আগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূবাইল বাজার এলাকায় ফেলে যায়। প্রায় ২০ দিন হয়ে গেলেও ওই বৃদ্ধাকে কেউ নিতে আসেনি।

খবর পেয়ে রোববার বিকেলে গাজীপুর সমাজসেবা অধিদফতরের লোকজন বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যান।
আপনজনের দেখা না পাওয়ায় বৃদ্ধা আমেনা বেগম কোনো লোক দেখলেই বলেন, ‘আমারে কি নিতে আইছ’।

সকালে পূবাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি পরিত্যক্ত টং দোকানের সামনে ওই বৃদ্ধা বসে আছেন। যাকে কাছে পাচ্ছেন তাকেই জিজ্ঞাসা করছেন ‘আমারে নিতে আইছ’। সারাক্ষণ তিনি তার প্রিয় স্বজনদের মুখ খুঁজে ফিরছেন।

রোববার দুপুর পর্যন্ত তার কোনো স্বজন তাকে নিতে আসেনি। স্থানীরা ওই বৃদ্ধাকে কলা, রুটি, ভাত, পানি দিচ্ছেন। কিছু জিজ্ঞাসা করলেই তার দুই চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরে।

বৃদ্ধা জানান, তার মেয়ে ও জামাতা তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তা না করতে পেরে ফেলে যায়। বৃদ্ধা তার ঠিকানা সঠিকভাবে বলতে না পারায় স্থানীয়রাও তাকে নিজ বাড়িতে ফেরত পাঠাতে পারছে না।

women

আমিনুল ইসলাম/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।