যৌতুক যোগাতে না পারায় শিশু কনের আত্মহত্যা
‘প্রিয় আল-আমিন, আমি তোমাকে ভালবাসতাম ঠিকই। কিন্তু তোমার পরিবার থেকে যে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক চাওয়া হয়েছে তা আমার বাবা দিতে পারবে না। তোমার মা এ টাকা ছাড়া বিয়ে মেনে নিবে না। তাই আমি চলে গেলাম। আর কোনো দিন তোমার সামনে আসবো না। ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তুমি অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে কর। যদি কোন ভুল করে থাকি ক্ষমা করে দিও।`
চিরকুটটি লেখা ১১ বছরের শিশু শান্তি আক্তারের। গাজীপুরের শ্রীপুরে পিতামাতার সঙ্গে বাস করা শান্তি চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী হলেও তার বিয়ের দিন ছিল কাল (শনিবার)। কিন্তু শান্তির বাবা-মা তার বিয়ের যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা যোগাতে ব্যর্থ হয়। এ কারণে শুক্রবার সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে শান্তি। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে এসআই মজিবর জানান, উভয় পরিবার শনিবার আল আমিনের সঙ্গে শান্তির বিয়ের দিন ঠিক করেছিল। শান্তি আক্তার উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের (ঢালীপাড়া) আব্দুল খালেকের মেয়ে। সে আবদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী।
তিনি আরও জানান, শনিবার শান্তির সঙ্গে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী গ্রামের আল-আমিনের বিয়ের দিন ধার্য ছিল। আল-আমিন শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজারের ডিস লাইনম্যান হিসেবে কাজ করেন।
পুলিশ জানান, শান্তির দিনমজুর বাবা আব্দুল খালেক শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নাস্তা সেরে কাজে বের হয়ে যান। মা ফিরোজা আক্তার শান্তিকে বাড়িতে রেখে স্থানীয় বাজারে তেল কিনতে যান। বাজার থেকে ফিরে এসে মেয়েকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পান। এ সময় তার পাশ থেকে আল-আমিনের উদ্দেশে লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়।
এসআই মজিবর রহমান বলেন, লাশের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর সদরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের বাবা-মাকে পাওয়া যায়নি। বাল্যবিয়ের অভিযোগে উভয় পরিবারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এএইচ/পিআর