মেডিকেলে ভর্তির টাকা যোগাড় হয়নি রাসেলের


প্রকাশিত: ১১:০৪ এএম, ২২ অক্টোবর ২০১৬

রাসেল মাহমুদ। বাড়ি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার আলীরপাড়া গ্রামে। বাবা ফেরি করে গ্রামে গ্রামে কাপড় বিক্রি করেন। মা বাড়িতেই হাঁস-মুরগি পালন করে সংসার চালান।

জমির পরিমাণ মাত্র ১১ শতক। সেই জমির ওপরই বাড়ি। সব মিলে চরম অভাবের সংসার তাদের। কিন্তু এই অভাবকে শুরু থেকেই পাত্তা দেননি রাসেল। বাবা সারাদিন কাপড় বিক্রি করে যা আয় করতেন সন্ধ্যায় সেই টাকা দিয়ে বাজার করে বাড়ি ফিরতেন। এভাবেই চলছে তার সংসার। চলছে এখনো আগের মতোই। আর এসব কখনোই অজুহাত মনে করে রাসেল পড়ালেখা থামাননি। তার কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল শত কষ্টেও কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়?

চরম অভাবে থেকেও ২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় রাসেল আলীরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। এরপর মেধাযুদ্ধে স্থান পেয়ে যায় গাজীপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখানে পড়ালেখার সব দায়িত্ব নেন শিক্ষকরাই। ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় রাসেল আবারো গোল্ডেন জিপিএ ৫ পায়।

এরপর শুরু হয় ভর্তিযুদ্ধ। রাসেলের শখ ছিল মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার। শখ পূরণ করতে বরিশাল মেডিকেলে চান্স পায় রাসেল। সেখানে তার মেধাক্রম ১৪৩৯। আগামী ২৪ অক্টোবর বরিশাল মেডিকেলে ভর্তির শেষ দিন। ভর্তি হতে রাসেলের লাগবে মাত্র সাড়ে ১১ হাজার টাকা। তার বাবা অবশ্যই দিন-রাত চেষ্টা করছেন টাকা জোগাড়ের। তবে কারো কাছে হাত পাতেননি তিনি।

শনিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে জাগো নিউজের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রাসেলের বাবা মোতালেবের সঙ্গে। তুলে ধরেন জীবন কাহিনী। তিনি বলেন, হয়তো ২৪ তারিখের মধ্যে টাকা জোগাড় করেতে পারবো। না পারলে রাসেলকে ভর্তি করানো কঠিন হয়ে যাবে।

কেউ যদি রাসেলকে ভর্তির ব্যাপারে সহযোগিতা করতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সহযোগিতা করলে তো খুবই উপকার হবে।

এরপর কথা হয় রাসেলের সঙ্গেও। রাসেল জানায়, গাজীপুর ক্যান্টপাবলিকে স্যারদের যে সহযোগিতা পেয়েছি তা আজীবন স্মৃতিতে আটকে থাকবে। এখন মেডিকেলে ভর্তির পালা। এখানেও ভোগান্তির শুরু। তবে বাবা টাকার জন্য খুব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন হয়তো শেষ পর্যন্ত জোগাড় হয়ে যাবে। মাত্র সাড়ে ১১ হাজার টাকার ব্যাপার। তাছাড়া বাড়িতে বিক্রি করার মতো কিছু নেই বলেই এই চিন্তা।

রাসেল বলেন, কেউ যদি সাড়ে ১১ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে তাহলে আমার বাবার কষ্টটা অন্তত কম হবে। আমারও অনেক উপকার হবে।

রাসেলরা চার ভাই-বোন। দ্বিতীয় সে। বড় বোন মনিরা খাতুনের দশম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট বোন মুন্সি বকশীগঞ্জ উলফাতুন নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট ভাই সবুজ চিকরকান্দি কাওমি মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে।

যদি কেউ তাকে সহযোগিতা করতে চান তাহলে রাসেলের ০১৯১৪৯৯০৯১৮ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।  

এমএএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।