কান্না থামছে না খাদিজার মায়ের
আহাজারি থামছে না সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের স্বজনদের। বিশেষ করে খাদিজার মা মনোয়ারা বেগমের কান্না কোনো ভাবেই থামানো যাচ্ছে না। একমাত্র মেয়ের এমন অবস্থা দেখে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।
এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে খাদিজার ওপর এমন ঘৃণ্য ও নিষ্ঠুর হামলার ঘটনায় কেবল তার নিজ গ্রাম হাউসা নয়, পুরো সিলেটের মানুষ ক্ষুব্ধ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোকজন তাদের এ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন। এছাড়া খাদিজার ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবারও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
সরেজমিনে খাদিজার গ্রামের বাড়ি হাউসায় গিয়ে দেখা গেছে, খাদিজার মা মনোয়ারা বেগম বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। বাবা বিএনপি নেতা মাসুক মিয়া সৌদি আরবে অবস্থান করলেও মোবাইলে তিনিও কান্নাকাটি করছেন। আর বারবার বলছেন ‘যত টাকা লাগুক, খাদিজাকে যেখানে নিয়ে গেলে সে ভালো হবে সেখানে নেয়া হোক। যত টাকা লাগবে আমি দেব। এমন কথা বলছেন আর বিলাপ করছেন বাবা মাসুক মিয়া।
গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে খাদিজার মা মনোয়ারা বেগম তার মেয়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, আমার কলিজার টুকরার ওপর হামলাকারী বদরুলের ফাঁসি চাই। খাদিজার তিন ভাই রয়েছে। এক মাত্র বোন তিনি। বড় ভাই শাহীন আহমদ চীনে এমবিবিএস পড়ছেন। ছোট দুই ভাইয়ের মধ্যে সালেহ আহমেদ সিলেট সেন্ট্রাল কলেজে পড়ছেন এবং সবার ছোট ভাই জুবায়ের স্থানীয় একটি মাদরাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
মর্মান্তিক এমন খবর শোনার পর স্বজনরা বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন, আবার কেউ কেউ দুই হাত তুলে খাদিজার সুস্থতা কামনা করে মোনাজাত করছেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিকেলে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রির (পাস) ছাত্রী খাদিজা। পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম (২৭)।
বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজা চিকিৎসাধীন। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। এ ঘটনায় বদরুলকে একমাত্র আসামি করে শাহপরান থানায় খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/এমএস