নেত্রকোনায় ৮ মাসে ৯২ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু
নেত্রকোনায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৯২ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর বেশির ভাগই সড়ক দুর্ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা। এছাড়া অস্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্যে রয়েছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা, বিষপানে আত্মহত্যা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ও পানিতে ডুবে।
স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়েও অনেক বেশি। কারণ অনেক সময় নিভৃত পল্লী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে মৃত্যু, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কেউ মারা গেলে পুলিশি হয়রানি কিংবা ময়নাতদন্তে কাঁটা ছিঁড়ার ভয়ে প্রশাসনকে না জানিয়ে অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করায় তা সরকারি হিসেবে নথিভুক্ত হয় না।
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্র মতে, নেত্রকোনায় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ৯, ফেব্রুয়ারি মাসে ১১, মার্চ মাসে ৮, এপ্রিল মাসে ১০, মে মাসে ১৫, জুন মাসে ১১, জুলাই মাসে ১১ এবং আগস্ট মাসে ১৭টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নেত্রকোনা জেলা শাখার সংগঠক সাংবাদিক আলপনা বেগম জাগো নিউজকে জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে সবার আগে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে রাস্তায় কিভাবে গাড়ি চালাতে হয়, সেই সব নিয়ম কানুন সম্পর্কে চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ গাড়ি চালক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক, অদক্ষ এবং মাদকাসক্ত অবস্থায় কেউ যেন গাড়ি না চালায় এবং ট্রাফিক আইন যাতে সবাই মেনে চলে তার জন্য ট্রাফিক বিভাগকে আরো আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
জেলা সুজনের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল জাগো নিউজকে জানান, ভাড়ায় মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত যাত্রী, অদক্ষ ড্রাইভার কর্তৃক গাড়ি চালানো কিংবা ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার না থাকায় দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। পথঘাট সংস্কারসহ ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করলে দুর্ঘটনা কমবে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধ কল্পে জেলা আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সভায় পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে বার বার অনুরোধ জানানো হচ্ছে যে, বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অদক্ষ চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার। এছাড়াও পুলিশ বিভাগ সড়ক দুর্ঘটনার পরপরই মামলা নিচ্ছে এবং অভিযুক্ত চালকদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনছে।
কামাল হোসাইন/এআরএ/এবিএস