সরকারি খাল দখল : তলিয়ে গেছে সহস্রাধিক বিঘার ধান


প্রকাশিত: ০৩:১৭ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৬

চুয়াডাঙ্গার জীবনগর উপজেলার মৃগমারী-দেহাটি সরকারি খালটি অবৈধভাবে দখল করার পর খালের দু’পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে তাতে চাষাবাদ শুরু করেছেন এলাকার প্রভাবশালীরা।

বিশেষ করে খালের মাঝখানে চাষাবাদের কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে গত কয়েক দিনের অতি বৃষ্টির ফলে মৃগমারী ও যদুপুর বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ওই দু’বিলের আশপাশের প্রায় সহস্রাধিক বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে এবং অবশিষ্ট আরো ৫০০ বিঘা জমির ধানক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

কৃষকরা জানান, এ ৫০০ বিঘা জমির ধানও এক সপ্তাহের মধ্যে পচে নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেতের মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে উথলী, মৃগমারী, ডুমুরিয়া ও যদুপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা খালের পানি প্রবাহ ঠিক রাখার দাবিতে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

fild
    
অভিযোগ সূত্রে ও সরজমিনে ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত ৪ বছর পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খালটি শুকিয়ে যায়। এ সুযোগে মৃগমারী গ্রামের আব্দুল গনি খালের অধিকাংশ জায়গা দখল করে নেন। এরপর খালের দু’পাশ থেকে মাটি কেটে তা ইটের ভাটায় বিক্রি করেন।

এছাড়া ডুমুরিয়া গ্রামের মো. আফাজ উদ্দীনের ছেলে প্রভাবশালী ভূমিদস্যু মোমিন হোসেন, মো. মফিজ উদ্দীনের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম, মো. তফে মন্ডলের ছেলে মো. আবু হোসেন, মো. মলি­ক হোসেনের ছেলে মো. নাসিরসহ ২০/২২ জন খালের অধিকাংশ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন। তারা খালের দু’পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে সেখানে চাষাবাদ শুরু করেছেন।

খালের ধারের মাটি কেটে নেবার ফলে সম্প্রতি ৩ দফায় ভারী বর্ষণের কারণে খালের পার্শ্ববর্তী জমির মাটি ভেঙে খালে পড়ে বিভিন্ন জায়গায় বাঁধের সৃষ্টি হয়েছে। খালে চাষাবাদ ও বাঁধের কারণে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কয়েকদিনের অতি বৃষ্টির কারণে বিল দুটিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় সহস্রাধিক বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে এবং অবশিষ্ট আরো ৫০০ বিঘা জমির ধানক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

fild

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল গনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ৩/৪ বছর আগে খালের পাড় থেকে মাটি কেটেছিলাম। সেখানে ধান চাষ করা হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হান্নান জানান, খাল দখলের এবং পানিতে ধানক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।  

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূরুল হাফিজ বলেন, যে সকল ব্যক্তি খালের দু’পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে চাষাবাদ করছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সালাউদ্দীন কাজল/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।