শতাব্দী পেরিয়ে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়


প্রকাশিত: ০৭:০৪ এএম, ০৪ আগস্ট ২০১৬

দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন শহর পিরোজপুরকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। দেখতে দেখতে বিদ্যালয়টি শত বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত করেছে। আর কালে কালে গড়ে তুলেছে দেশের অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তি।

১৮৫৯ সালে স্থাপিত মহাকুমা শহরটিতে ১৮৬৫ সালে থেকে শিক্ষিত ও সচেতন সম্প্রদায়ের বসতি গড়ে ওঠে। ১৮৬৬-৬৭ সালে স্যার জন লরেন্সের সময় পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি ‘ন্যাশনাল স্কুল’ নামে একটি নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্থাপিত হয়। পরে ১৮৮২ সালে নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়।

১৮৮৫ সালের ১৪ই ডিসেম্বর ৬.৬৮ একর ভূমি বৃটিশ সরকার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাস্ত করে। ১৯০৯ সালে ১৯শে এপ্রিল পিরোজপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারি বিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১ জুলাই থেকে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে কাজ শুরু করে। ২০০৫ সালে স্কুল চত্বরের উত্তরে আরেকটি নতুন দ্বিতল ছাত্রবাস নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি সর্বমোট ৮.৮২ একর জমির উপর অবস্থিত।

pirojpur

স্কুল প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যেই এখানকার ছাত্ররা কৃতিত্বের পরিচয় দেন। এখানকার অন্যতম কৃতি ছাত্রদের মধ্যে ইত্তেফাকের রয়েছেন- প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জেল হোসেন মানিক মিয়া, কবি আহসান হাবীব, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, অভিনেতা গোলাম মোস্তফা, সাবেক সি এস পি মো. মূসা ও ব্যাংকার মোর্শেদ কুলি খানসহ অনেকেই।
 
পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রাক্তন ছাত্র এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২৭ মার্চ বিকেলে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়কে হেড কোয়ার্টার বানিয়ে মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয়েছিলো।

ওই স্কুলই মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যারাক হিসেবে ব্যবহৃত হতো এবং ৮ ডিসেম্বর পিরোজপুর হানাদারমুক্ত করা হয়েছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দেশ বিদেশে অবস্থানরত প্রাক্তন ছাত্ররা বহুদিন যাবৎ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে সকলকে একত্রিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

প্রাক্তন ছাত্র ব্যারিস্টার এম. সরোয়ার হোসেন জানান, পিরোজপুর যেকোন জেলা থেকে বেশ অনুন্নত। এ সমস্ত ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আর এতে আমরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারি।
 
দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গৌরবদীপ্ত বিদ্যাপিঠ পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টির হাজার হাজার শিক্ষার্থী দেশ ও জাতি গঠনে অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলেছে।

এফএ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।