জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ : ২ শিশুর মৃত্যু
যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে করে পাঁচ উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রামের আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ৩৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যার পাানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এক শিশু এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
বন্যার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার ইসলামপুর উপজেলার ইসলামপুর সদর, কুলকান্দি, চিনাডুলি, বেলগাছা, নোয়ারপাড়া, সাপধরী, পার্থশী, পলবান্ধা, গোয়ালেরচর, গাইবান্ধা, চরগোয়ালীনি, দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানি, চুকাইবাড়ি, ডাংধরা, বাহাদুরাবাদ, মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী, চরপাকেরদহ, কড়ুইচুড়া, জোড়খালী এবং মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর, নাংলা, আদ্রা, দুরমুঠ, কুলিয়া, ফুলকোচা, ঘোষেরপাড়া, ঝাউগড়া, শ্যামপুর, নয়ানগর, সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা, আওনা, পোগলদিঘা, সাতপোয়া, কামরাবাদ ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম বন্যা প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার পানি নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় ইতোমধ্যেই আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মেলান্দহ-মাহমুদপুর সড়কসহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে স্থানীয় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বসতঘরে বন্যার পানি ঢুকে যাওয়ায় বিভিন্ন বাঁধ এবং উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বন্যা দুর্গতরা।
সেই সঙ্গে দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় জেলার ৩৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও ৪ হাজার ৯০ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গত এলাকায় এখন পর্যন্ত ২২৭ মে.টন চাল, ১৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ২ লাখ ২০ হাজার নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জের ৮টি ফ্লাট সেন্টারে ৫০০ পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও বন্যার পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় সেই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়ে দুর্গত এলাকার মানুষ।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামপুর উপজেলার চরপুটিমারী এলাকায় শাকিল ও রাকিব নামে দুই শিশু বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। এছাড়াও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় আশিক নামে আরো এক শিশু বন্যার পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছে।
শুভ্র মেহেদী/এসএস/পিআর