২২ খাল বেদখলে পানিবন্দী হাজারো মানুষ
ঝালকাঠি শহরে এক সময় জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ২২টি খাল। এসব খালে নিয়মিত ছোট বড় নৌ-যানের যাতায়াত ছিল। কিন্তু প্রভাবশালীদের বেদখলের কবলে পড়ে একে একে খালগুলো তাদের পানি প্রবাহের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।
ফলে টানা এক ঘণ্টার বৃষ্টি হলেই শহরের বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের। অন্যদিকে প্রভাবশালীদের খাল দখল ও অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে পানিবন্দী হয়ে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ।
বেদখল হওয়া এসব খালের মধ্যে রয়েছে-
বাঁশপট্টি খাল: বাসন্ডা নদীর কাঠপট্টি ট্রলাঘাট থেকে উৎপন্ন হয়ে বাশপট্টি, উদ্বোধন বহুমুখী বিদ্যালয়, মাছ বাজার, উপজেলা পরিষদ, শীতলা খোলা, ফায়ার সার্ভিসের পিছন হয়ে জেল খানার সামনে শেষ হয়েছে। বাঁশপট্টি খালের শাখা খাল ৫টি। এগুলো হলো- টাউন মসজিদ থেকে হালিমা বোর্ডিংয়ের পিছন পর্যন্ত ফকিরবাড়ি খাল, বাশপট্টি মন্দির থেকে আকন বাড়ি পর্যন্ত কাঠপট্টির খাল, মাছ বাজারের পোল থেকে আমতলা গলি পর্যন্ত বাটার খাল, শোভারাণির বাড়ি থেকে ফরিয়াপট্টি পর্যন্ত কাশারিপট্টি খাল এবং নতুন কলাবাগান থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত কলাবাগান খাল।
থানার খাল: সুগন্ধা নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে শহরের পুলিশ ফাঁড়ির সামনে শেষ হয়েছে এ খাল। এর শাখা খাল ৪টি। এগুলো হলো- হাবিব মিয়ার স-মিল থেকে সিটি ক্লাব হয়ে থানা রোড পর্যন্ত তরকারি পট্টি খাল, রিড রোড থেকে সিটি পার্ক হয়ে ক্রীড়া সংস্থা পর্যন্ত সিটি পার্ক খাল, গার্লস স্কুলের পেছন থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদ পর্যন্ত থানার পিছনের খাল, পৌর আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পৌরসভার পিছন দিয়ে পদ্মা ডিপো পর্যন্ত ডিপোর খাল।
জেলে পাড়া খাল: সুগন্ধা নদীর পুরাতন কলেজ খেয়াঘাট থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব চাঁদকাঠি চৌমাথা হয়ে নতুন কলেজ রোডে বিদ্যুৎ অফিসের পিছনে গিয়ে শেষ হয়েছে জেলে পাড়া খাল। এর একটি শাখা খালগুলো হলো- বাগানবাড়ির পাশ দিয়ে বসুন্ধরা সড়ক হয়ে বিদ্যুৎ অফিসের পিছন পর্যন্ত ঝালাইকর বাড়ির খাল।
এসব খালগুলো একে একে বেদখল করে প্রভাবশালীদের বাসার পিছনের বারান্দা নির্মাণ, দোকানঘর নির্মাণ এবং ময়লা আবর্জনায় ভরে খালগুলোর পানি প্রবাহের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দেখলেই বিভিন্ন সভা সেমিনারে পৌর কর্তৃপক্ষ খাল খননের প্রতিশ্রুতি দেন। শুকনো মৌসুমে জেলা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে খালগুলো খনন করে জলাবদ্ধতা নিরসন করা হবে বলা হয়। কিন্তু শুকনো অথবা শীতের মৌসুম এলে হারিয়ে যায় এসব প্রতিশ্রুতি।
কাপড় ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন ও আব্দুল করিম হাওলাদার জানান, শহরের মূল কাপড়িয়াপট্টির খালটি দিয়ে সব পানি ও ময়লা বের হয়। কিন্তু এ খালটি ভরাট হয়ে রাস্তা সমান হয়ে গেছে। তাই সমান্য বৃৃষ্টি হলেই খাল ও ড্রেনের ময়লা পানি দোকানে উঠে যায়।
জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।
এফএ/পিআর