সুন্দরবনে কোনো প্রকার দস্যুতা করতে দেয়া হবে না


প্রকাশিত: ০৮:০০ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৬

সন্ত্রাস ও দস্যুতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকার বদ্ধপরিকর। সুন্দরবন এলাকায় কোনো প্রকার দস্যুতা করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুতা ও বিপদমুক্ত করতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞবদ্ধ। যারা দস্যুতা বাদ দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছে সরকার তাদের স্বাগত জানায়। অন্যরাও এই পথে ফিরে আসবে এই প্রত্যাশা করছি। আর যারা এরপরও একাজের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের কি অবস্থা হবে তা বলে সময় নষ্ট করতে চাই না।

শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাটের মংলা বন্দরের বিএফডিসি জেটি ঘাটে বনদস্যুদের অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির এসব কথা বলেন তিনি।

khulna-surrender

সুন্দরবনের বনদস্যুদের আশ্রয়-প্রশয় দাতাদের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা তাদের অস্ত্রসহ অন্যান্য সহযোগিতা করছে তাদের খোঁজ-খরব নেয়া শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এর আগে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ২৫টি অস্ত্র ও এক হাজার গোলাবারুদসহ সুুন্দরবনের আরো দুই বনদস্যু বাহিনী   আত্মসমর্পণ করে। পরে বনদস্যু মজনু বাহিনীর প্রধান মো. মজনু, রবিউল ইসলাম, ইদ্রিস আলী, রহমত, বাবুল হাসান, এনামুল, ইসমাইল, মজনু সেখ, জাহাংগীর হোসেন এবং ইলিয়াস বাহিনীর প্রধান ইলিয়াস হোসেন ও নাসিরকে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ খুলনার দাকোপ থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। র‌্যাবের পক্ষ থেকে বনদস্যুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। 

khulna-surrender

দুপুর পৌনে ১টায় মংলার বন্দরের বিএফডিসি জেটি ঘাটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে অস্ত্রজমা দিয়ে সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়ানো বনদদস্যু মজনু বাহিনীর ৯ সদস্য ও ইলিয়াস বাহিনীর দুই সদস্যসহ মোট ১১ সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ পথে এগিয়ে আসে।

গত ৩১ মে কুখ্যাত বনদস্যু কাদের মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্যের আত্মসমর্পণের ধারবাহিকতায় এই দুই বনদস্যু বাহিনী দুপুরে আত্মসমর্পণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে।  

পরে বনদস্যুদের জমা দেয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ খুলনার দাকোপ থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। র্যাবের পক্ষ থেকে বনদস্যুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন র্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ, খুলনা রেজ্ঞর ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান, র্যাব-৮ এর কমান্ডার ফরিদুল আলম, র্যাব -৬ এর কমান্ডার খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, র্যাব -৮ এর উপ-অধিনায়ক অফিসার মেজর আদনান কবীর, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম প্রমুখ।

khulna-surrender

ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল ও র্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ দুপুর সাড়ে ১২টায় মংলায় পৌঁছান। তারপর পৌনে ১টার দিকে মজনু বাহিনীর প্রধান মো. মজনু মন্ত্রীর হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে।

তারপরই ইলিয়াস বাহিনীর প্রধান মো. ইলিয়াস অস্ত্র জমা দেন মন্ত্রীর হাতে। একে একে মজনু বাহিনীর ৯ জন ও ইলিয়াস বাহিনীর দুই সদস্য মোট ১১ বনদস্যু ২৫টি দেশি-বিদেশি অস্ত্র জমা দিয়ে আনুষ্ঠনিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন।

গত ৩১ মে সুন্দরবনে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় দস্যুবাহিনী হিসেবে পরিচিত কাদের মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্য ৫২টি অস্ত্র ও পাঁচ হাজার গুলি ও বিভিন্ন সরঞ্জাম জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্মসমর্পণ করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সুন্দরবনের বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা বনদস্যু মজনু ইলিয়াস বাহিনীর ১১ জন সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্মসমর্পণ করে।

শওকত আলী আশরাফী/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।