ভুয়া কোম্পানির ওষুধে সয়লাব খুলনার ফার্মেসিগুলো


প্রকাশিত: ০২:৪৬ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৬
প্রতীকী ছবি

জীবন রক্ষায় ওষুধের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ সুযোগ শতভাগ কাজে লাগাচ্ছে ওষুধসংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট। খুলনার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় অধিকাংশ ফার্মেসি এখন ভুয়া কোম্পানির ভেজাল ওষুধে সয়লাব। ওষুধগুলো কোথায় তৈরি হয়, কোথা থেকে সরবরাহ হয়, তা কারো জানা নেই।

সরবরাহকৃত ওষুধগুলোর প্যাকেটে লেখা নেই সঠিক ঠিকানা ও তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদানের নাম। নামি দামি কোম্পানির হুবহু প্যাকেটের সঙ্গে প্রায় মিল রেখে বাজারজাত করা হচ্ছে এসব প্রাণঘাতী ভেজাল ওষুধ। অনেক দোকানে নামি দামি কোম্পানির প্যাকেটের মধ্যে রাখা হচ্ছে এ ধরনের নিম্ন মানের ওষুধ।
 
ফার্মেসির মালিক ও ভুয়া কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা অজ্ঞাত স্থান থেকে প্যাকেটজাত করে এন্টিবায়োটিক, ভিটামিন এবং যৌন উত্তেজক এসব ইঞ্জেকশন, ট্যাবলেট ও সিরাপজাতীয় ওষুধগুলো দোকানে দোকানে সরবরাহ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
 
জেলার কয়রা, পাইকগাছা, তেরখাদা, দিঘলিয়া, রূপসাসহ অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে স্বঘোষিত হাতুড়ে ও অসাধু চিকিৎসকদের সিন্ডিকেট নিম্নমানের ভেজাল এসব ওষুধ সেবন করতে বাধ্য করছে রোগীদের। ওই হাতুড়ে ও অসাধু চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রেও থাকে এসব ওষুধের নাম।

এ ভেজাল ওষুধের তালিকায় রয়েছে এন্টিবায়োটিক, ভিটামিন ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিরাপ। এসব ওষুধ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি নন ফার্মেসির মালিক এবং ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা।

অপরদিকে ওষুধ প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে বিভিন্ন স্থানের মতো অনেক অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী এখন জিরো থেকে হিরো বনে গেছেন বলে দাবি এলাকার সাধারণ মানুষের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়রার এক ফার্মেসি মালিক জানান, প্রতারক কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ও ওষুধ ব্যবসায়ীরা চিকিৎসককে মাসিক চুক্তিতে উৎকোচ দিয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে ভুয়া কোম্পানির নামসর্বস্ব ভেজাল ওষুধ লেখার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ কিনতে রোগীদের মগজ ধোলাই করে ফার্মেসিগুলোর নিয়োজিত চাটুকার ওষুধ বিক্রেতারা।
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক ফার্মেসির মালিক জানান, ভুয়া কোম্পানির ওষুধগুলো গোপনে সরবরাহ হলেও রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে ওইসব ওষুধের নাম লেখা থাকে। এজন্যই তারা ভেজাল না আসল কিছুই বুঝে উঠতে পারেন না। তবে ওই ওষুধ বিক্রিতে লাভ বেশি হওয়ায় এবং ব্যবস্থাপত্র ফেরৎ যাওয়ার আশঙ্কায় তারা ইচ্ছার বিরুদ্ধেই ওষুধগুলো দোকানে রাখেন।
 
তিনি আরো জানান, ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই হাতে বিক্রি হয় যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও বিভিন্ন আইটেমের সিরাপ।

এ ব্যাপারে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, জীবন রক্ষায় ওষুধের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সেই ওষুধ নিয়ে কেউ যদি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এফএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।