সিন্ডিকেটের দখলে ঠাকুরগাঁওয়ের চিনির বাজার
ঠাকুরগাঁওয়ে সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি চিনির বাজার। তারাই দাম নিয়ন্ত্রণ করছেন। বাণিজ্য মন্ত্রীর অনুরোধও তারা বিবেচনায় না নিয়ে নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে চলেছেন। পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও চিনির দাম খোলাবাজারে এখন বেড়ে হয়েছে ৬২ টাকা।
ঠাকুরগাঁওয়ে হঠাৎ করে চিনির দাম কেজিতে ১০/১২ টাকা বেড়ে গেছে। গত দশদিন আগে চিনি বিক্রি হয়েছে ৫২/৫৪ টাকায়। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬২/৬৬ টাকা কেজি দরে।
খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় তাদেরও বেশি দামে চিনি বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে রমজানের সময় হঠাৎ চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও চিনিকলে বর্তমানে চিনি মজুদ আছে ৫ হাজার মেট্রিক টন। চিনি কলের পাইকারি ডিলার রয়েছেন ৬ শত ৫৩ জন। ঠাকুরগাঁও চিনি কল তার ডিলারদের কাছে ৪৮ টাকা খোলা ও ৫২ টাকা প্যাকেট কেজি দরে চিনি বিক্রি করছে। প্রত্যেককে ১ টন করে চিনি দেওয়ার বরাদ্ধ রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও শহরের হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা সামসুল ইসলাম জানান, গত দশ দিন আগে তিনি ঠাকুরগাঁও কলিবাড়ি বাজার থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে দুই কেজি দেশি চিনি কিনেছেন। গত সোমবার একই দোকানে প্রতি কেজি চিনির দাম ৬০ টাকা শুনে একটু হতবাক হয়েছেন। কেজিতে ১০ টাকা বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের কাম্য নয়। আর আমাদের চিনিমিলে অনেক চিনি নষ্ট হচ্ছে। দেখার কেও নেই।
ঠাকুরগাঁও টিকাপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম জানান, রমজান মাসেই সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। আমরা এমন এক দেশে বসবাস করি যেখানে মানুষের দুর্দিনে জিনিসের দাম বাড়ে। মন্ত্রীর অনুরোধও ব্যবসায়ীরা শুনলো না। আমাদের চিনিমিলে এত চিনি পড়ে থাকা সও চিনির দাম বেড়ে গেল।
ঠাকুরগাঁও জেলার কালিবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী ওমর ফারুক জানান, কালিবাড়ি বাজারের বিভিন্ন দোকানে বেসরকারি কোম্পানির চিনি ৬৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আমাদের সুগার মিলের চিনি বিক্রয় হচ্ছে ৬৩ টাকা দরে।
ঠাকুরগাঁও কালিবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী খায়রুল হাসান জানান, ঠাকুরগাঁও চিনিকলের চিনি তিনি পাইকারি ডিলারদের কাছ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে কিনে খুচরা ৫২ টাকায় বিক্রি করেছেন। কিন্তু এখন পাইকারি বাজারে সেই চিনিই কিনতে হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজিতে। আর খরচ মিলিয়ে সে চিনি বিক্রি করছেন ৬০ টাকায়।
ঠাকুরগাঁও চিনিকলের পাইকারি ডিলার ইয়াকুব আলী জানান, ঠাকুরগাঁও সুগার মিল থেকে গত মাসে ১ টন চিনি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন চিনি নেই। তাই বাজারে চিনির দাম বেড়ে গেছে। আমার কাছে যা চিনি ছিল বিক্রি হয়ে গেছ। আবার চিনি পেলে সেই দামেই বিক্রি করবো।
বাজারে চিনির মূল্য বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন বলেন, বাজারে আমাদের পর্যাপ্ত চিনি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেনো যে ব্যবসায়ীরা চিনির দাম বৃদ্ধি করছে সেটা বুঝলাম না। চিনির বরাদ্ধ প্রধান অফিস থেকে দেওয়া হয়। এইমাসে ৬ শত ৫৩ জন ডিলারকে ১ টন করে চিনি দেওয়া হয়ে গেছে।
এফএ/এমএস