টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইনে পিছিয়ে রংপুর
সারাদেশে চলমান টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইন কর্মসূচিতে পিছিয়ে রয়েছে রংপুর। প্রায় ৪৯ লাখ শিশুকে টাইফয়েড টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮৫ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। যা দেশের অন্য বিভাগের তুলনায় কম।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালা। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহাম্মদ হিরুজ্জামান।
কর্মশালায় বলা হয়, দেশব্যাপী ৯ মাস হতে ১৫ বছর কম বয়সি সব শিশুদের এক ডোজ টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিবি) টিকা দেওয়া হবে। ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ ক্যাম্পেইন চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। টিকা ক্যাম্পেইনে দেশের অন্য বিভাগগুলোর তুলনায় রংপুর বিভাগের পিছিয়ে থাকার বিষয়টি বক্তাদের আলোচনায় উঠে আসে।
রংপুর বিভাগের আট জেলায় ৪৮ লাখ ৯৯ হাজার ৮২২ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮৫ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৮১ জন।
কর্মশালায় বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত একটি রোগ যেটি দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। প্রতিবছর টাইফয়েড জ্বরে দেশে ৩ লাখ শিশু আক্রান্ত হয় এবং মারা যায় ৬ হাজার শিশু।
টাইফয়েড টিকা নেওয়ার মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বর ও জ্বর জনিত জটিলতা প্রতিরোধ করা যায়। টিকার কারণে গুটি বসন্ত দূর হয়েছে, বাংলাদেশ পোলিও মুক্ত সনদ অর্জন করেছে এবং শিশুরা পঙ্গুত্ব থেকে রক্ষা পেয়েছে। টিকার কারণে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী হেপাটাইটিস-বি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, দেশে মা ও শিশুর ধনুষ্টংকার দূরীকরণ সম্ভব হয়েছে, টিকার কারণে মারাত্মক হাম-রুবেলা নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে এবং টিকার মাধ্যমেই হাম-রুবেলা দূরীকরণ সম্ভব হবে।
শিশুদের টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শতভাগ সফল করতে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা ও সুপারিশ তুলে ধরেন বক্তারা। এছাড়া জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে টিকা গ্রহণের নির্দেশনা থাকলেও কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে না পারলে তাকেও টিকা প্রদান করা হবে বলে জানান আয়োজকরা।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক আবু জাফর। বিশেষ অতিথি ছিলন রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক গওসুল আজিম চৌধুরী, রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল এবং ইউনিসেফ ও রংপুরের প্রধান ফিল্ড অফিসার তৌফিক আহমেদ।
এছাড়া রংপুর সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানাসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জিতু কবীর/এমএন/এএসএম