ঈদে নিজের কাপড়ই সেলাই হয় না


প্রকাশিত: ০৬:৫৮ এএম, ১৮ জুন ২০১৬

নিপুণ হাতে কাপড় কেটে সেলাই করে যারা আমাদের পড়ার উপযোগী করে তোলেন তাদের একজন দিপক অধিকারী। তিনি ১০-১৫ বছর ধরে কাপড় সেলাই করেন।

তিনি বলেন, কোনো ঈদে নিজের জন্য কাপড় সেলাই করতে পারি না। সেলাই করবো করবো বলে সময় শেষ হয়ে যায়।

সামনে ঈদ, নতুন কাপড় না হলে কি ঈদ হয়। নতুন জামা, থ্রি পিচ, পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদ যেন কারো ঘরে আসেই না। আর এসব নতুন থান কাপড় কিনতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় মার্কেটে। কিন্তু এই নতুন থান কাপড়কে যারা সুন্দর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় আমাদের পড়ার উপযোগী করে তাদের খবর কেউ রাখে না। তারা থেকে যায় পর্দার আড়ালে।

Thakurgaon-Dorji

টেবিলে কায়দা করে কাপড় বিছানো। তারপর কচ কচ করে কাঁচিতে কাটা। পাশেই সেলাই মেশিনের খরর খরর শব্দ। পোশাক বানানোয় ব্যস্ত দর্জিরা। ঘুম নেই দর্জিপাড়ায়।

ঈদকে সামনে রেখে ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের দর্জিবাড়ির কারিগররা। ঠাকুরগাঁও বিভিন্ন মার্কেটে দর্জির দোকানের কারিগরদের এখন দম ফেলার জোঁ নেই। দিন-রাত নতুন নতুন পোশাক বানিয়ে চলেছেন তারা।

ঠাকুরগাঁও নর্থ সার্কুলার রোডের ইডেন টেইলার্সের মালিক শ্রী লিটন চন্দ্র গোস্বামী জানান, পঁচিশজন কারিগর দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছিলাম। রোজার আগে কাজের অর্ডার বেশি থাকায় আরও কয়েকজন কারিগর নিয়োগ দিয়েছি। তারপরও গ্রাহক সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কাজের অর্ডার এখন পর্যন্ত ভাল আসলেও তা গত বছরের তুলনায় কম। ঈদের আগে অর্ডার আরও বাড়তে পারে।

Thakurgaon-Dorji

তিনি আরো জানান, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা আধুনিক ফ্যাশনের পোশাক তৈরি করে থাকি। এ কারণে আমার দোকানে প্রচুর ভিড় হচ্ছে। রমজানের আগেই কাজের চাপ শুরু হয়েছে।

রবিউল আলম নামে এক গ্রাহক জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি তৈরি করা শার্ট-প্যান্ট পরেন। প্রতি বছর তিন থেকে চার সেট পোশাক বানাতে হয় তার। ব্যতিক্রম হয়নি এবারের ঈদেও। একটি অভিজাত দোকানে একটি শার্ট ও একটি প্যান্ট ৭০০ টাকা মজুরিতে সেলাই করিয়েছেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও হাওলাদার মার্কেটে পোশাক বানাতে এসেছেন লিপি আক্তার। তিনি জানান, ‘ঈদের সময় সবাই চায় নতুন পোশাক পড়তে। রেডিমেড পোশাকের দোকানে একই নকশার অনেক পোশাক থাকে। ফলে সেখান থেকে কেনা পোশাকটির স্বাতন্ত্র্য অনেক ক্ষেত্রেই থাকে না। এজন্য প্রতিবারই ঈদে নিজের পছন্দমতো কাপড় কিনে দর্জির কাছে বানাতে দেই।’

ঠাকুরগাঁও এলিট টেইলার্সের সত্ত্বাধিকারী আকবর হোসেন জানান, অন্য দর্জিদের তুলনায় তার সার্ভিস ভালো। গ্রাহকও বেশি। তাই কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাপড় সেলাই শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পোশাক সেলাইয়ের মজুরি প্রসঙ্গে জানান, অন্যান্য সময়ে একটি প্যান্টের মজুরি নেয়া হয় ৩৫০ টাকা। কিন্তু ঈদের সময় কারিগরদের পারিশ্রমিক বেড়ে যাওয়ায় এর মজুরি দাঁড়ায় ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, শার্টের মজুরি ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৩৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।