নোয়াখালী
এসএসসির পরীক্ষার হলে ছাত্রদল নেতা, ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা

নোয়াখালীর কবিরহাটে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রীদের কক্ষে প্রবেশ করে অসৎ সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আকাশের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পরীক্ষা কক্ষে ছাত্রদল নেতার বিচরণের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) কবিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কবিরহাট সরকারি কলেজ কেন্দ্রে কবিরহাট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নরোত্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও নরোত্তমপুর বালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রথমদিন বৃহস্পতিবার পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রীদের কক্ষে অবৈধভাবে অবস্থান করেন কবিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম আকাশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে ছাত্রদল নেতা পরীক্ষা কক্ষে ঢুকে অসৎ সহযোগিতা করবে, সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি আমরা স্যারদের বলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
মো. রফিক উল্যাহ নামে এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ থাকার বিধান নেই। সেখানে পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রদলের নেতা কিভাবে কক্ষে প্রবেশ করলো তা কেন্দ্র সচিবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম আকাশ পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কেন্দ্রের বাইরে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে হেল্প ডেস্ক বসিয়েছিলাম। পরীক্ষার কক্ষে পানি লাগবে বলায় সেখানে পানি দিতে গিয়েছিলাম। তবে আমাদের বিরোধী পক্ষের কেউ ছবি তুলে সেটি ভিন্নভাবে প্রচার করছে। তবে আমরা এভাবে কক্ষে প্রবেশ করা উচিত হয়নি। আমরা আর এভাবে যাবো না। ভবিষ্যতে বিষয়টি আমাদের মনে থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে কবিরহাট সরকারি কলেজ উপকেন্দ্রের (৫৪২) সচিব মো. ওহিদুরজ্জামানকে বারবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে পরীক্ষা কেন্দ্রের অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল-আশফাক অনিক পরীক্ষা কক্ষে ছাত্রদল নেতার প্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কেন্দ্রে পুলিশি নিরাপত্তা পর্যাপ্ত না থাকায় এমনটা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর আমরা সেনাবাহিনী ডেকে ব্যবস্থা নিয়েছি।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ওই কেন্দ্রে একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও একজন কনস্টেবল দায়িত্বপালন করেছেন। কেন্দ্র বেশি হওয়ায় এর বেশি পুলিশ দেওয়া যায়নি। তবে সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আমিও গিয়েছিলাম। কেউ এমন অভিযোগ দেয়নি।
বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূদম পুষ্প চাকমার মোবাইলে ও হোয়াটঅ্যাপে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। বক্তব্য চেয়ে মেসেজ দিলেও তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।
ইকবাল হোসেন মজনু/আরএইচ/এমএস