ঈদে টানা ৯ দিন বন্ধ বেনাপোল স্থলবন্দর

পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা ৯ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল স্থলবন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম। এরমধ্যে ২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল- এই আটদিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। ৬ এপ্রিল থেকে যথারীতি কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম চলবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস নীতি) মুকিতুল ইসলাম এক পত্রে এ তথ্য জানান। পত্রে টানা ৯ দিন কাস্টমস ও বন্দর বন্ধ থাকার কথা থাকলে (ঈদের দিন ছাড়া) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে এ নির্দেশ পালন করা হলেও বেনাপোলসহ অন্যান্য কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশনে তা পালন করা হয় না। এখানে বন্দর ব্যবহারকারীরা সবাই ছুটিতে চলে যাওয়ায় সব কিছু বন্ধ থাকে।
দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ৯০ ভাগই আসে বেনাপোল দিয়ে। মাত্র সাতদিনের এলসিতে পণ্য আনা যায় এ বন্দর দিয়ে। বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কলকাতার দূরত্ব ৮১ কিলোমিটার। আড়াই ঘণ্টায় চলে আসা যায় চেকপোস্টে। সে কারণে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানির জন্য বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে থাকেন।
সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, লম্বা ছুটিতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে পড়বে বিরূপ প্রভাব। এমনিতেই বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট লেগে থাকে। লম্বা ছুটির কারণে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাঁচামালের সংকট দেখা দিতে পারে। সীমান্তের দুই পাশের ট্রাকজট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, ২৭ মার্চ বিকেল থেকে বন্ধ হয়ে যাবে বেনাপোল-পেট্রাপোলের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি। কাস্টম ও বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ নিজ বাড়িতে ঈদ করতে রওয়ানা দেবেন। অনেক আমদানিকারক ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে দেশের বাড়ি যাবেন। তারা ঢাকা ফিরে না আসা পর্যন্ত কোনো পণ্যও খালাস নেবেন না। ৬ এপ্রিল থেকে পুনরায় বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম সচল হবে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া জানান, ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। আগের বছরগুলোতে ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার যাত্রী ভারতে গেলেও এ বছর কোনো চাপ নেই।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ঈদের ছুটি হয়ে যাচ্ছে। ছুটিতে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে যাতে কোনো ধরনের নাশকতামূলক বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা দিনে রাতে বন্দর এলাকায় টহল দেবে। পাশাপাশি বেনাপোল পোর্ট থানা কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি বলা হয়েছে। ৬ এপ্রিল থেকে বন্দরের কর্মতৎপরতা বাড়বে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দর এলাকায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ও দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য বিশেষ নজরদারি নেওয়া হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের পুলিশ সদস্যরা টহল দেবেন।
মো. জামাল হোসেন/জেডএইচ/জিকেএস