ঈদ কেনাকাটা

মধ্যবিত্তরাও ছুটছেন ফুটপাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর
প্রকাশিত: ০৬:০৭ পিএম, ২২ মার্চ ২০২৫

ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কেনাকাটার ধুম। নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ততম মোড়ের ফুটপাত থেকে অভিজাত শপিংমলে চলছে বেচাবিক্রি। নানা রঙের আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে অভিজাত শপিংমল, মার্কেট ও দোকান।

ভাসমান হকাররাও অস্থায়ী টেবিল বসিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন। অনেকে আবার ভ্যানে করে বিক্রি করছেন বিভিন্ন ধরনের পোশাক। নিম্নবিত্তের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও ছুটছেন ফুটপাতের এসব দোকানগুলোতে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড় থেকে ঢাউনহল চত্বর পর্যন্ত সড়কের দুইধারে কাপড়, স্যান্ডেল, জুতা, প্যান্ট-শার্ট, থ্রি পিস, শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, বাচ্চাদের কাপড়, টুপি, আতরসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা।

শুধু ওই সড়কেই নয়, নগরীর স্টেশন রোড, মেডিকেল মোড়, হাঁড়িপট্টি রোড, সিও বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত কেন্দ্রিক দোকানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদবাজার। এসব দোকানে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। অধিকাংশ ক্রেতারা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মধ্যবিত্তরাও ছুটছেন ফুটপাতে

সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার সামনে ফুটপাতে ভ্যানে করে কাপড় বিক্রি করছেন ওয়াহেদ হোসেন। তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন ফুটপাতে মানহীন কাপড় বিক্রি হয়। এ ধারণা একেবারে ঠিক নয়। এখানে ভালো মানের কাপড়ও পাওয়া যায়। আমাদের লাইটিং বিল নেই, দোকান ভাড়া নেই। সমান্য কিছু লাভে কাপড় বিক্রি করলেও চলে। এ কারণে আমাদের ক্রেতা শুধু নিম্নবিত্তরাই না, অনেক মধ্যবিত্তরাও কাপড় কিনতে আসেন।

নগরীর সিটি বাজারের সামনে ফুটপাতে কাপড় বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, কয়েকদিন ধরে বেচাবিক্রি ভালো হচ্ছে। অভিজাত শপিংমল ও মার্কেটের তুলনায় আমাদের ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় অনেক কম। এ কারণে অনেক ভালো মানের পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করতে পারি। এতে ক্রেতারাও সন্তুষ্ট হয়। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা আমাদের মতো ফুটপাত ও হকারদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সুপার মার্কেট মোড়ের ফুটপাতে কথা হয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা মহিবুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের মতো অনেক মধ্যবিত্ত এমন ফুটপাত সংলগ্ন দোকান বা সাধারণ মার্কেটগুলো থেকে কেনাকাটা করেন। প্রতিবছরের মতো এবারও বউ–বাচ্চার জন্য কিছু পোশাক কিনতে এসেছি।

নগরীর পায়রা চত্বরে তিন চাকার ভ্যান গাড়িতে শার্ট, প্যান্ট বিক্রি করছেন আয়নাল হক। জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুপুরের পর থেকে মূলত বেচাবিক্রি শুরু হয়। সন্ধ্যার পর বিক্রির পরিমাণ বাড়ে।

হোটেলকর্মী মিনহাজুল বলেন, আমরা গরীব মানুষ। চাইলে তো মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারি না। ফুটপাতের দোকানে কম দামে সুন্দর সুন্দর পণ্য পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর ঈদের আগে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করতে ফুটপাতে আসি।

বিজ্ঞাপন

মধ্যবিত্তরাও ছুটছেন ফুটপাতে

জাহাজ কোম্পানি মোড়ে ফুটপাতে ব্যবসা করছেন আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সারা বছর এ জায়গায় ব্যবসা করি। অনেক মৌসুমী হকার ঈদের আগে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়ি করে পণ্য বিক্রি করছেন। এতে ফুটপাতেও প্রতিযোগিতা বাড়ছে।

নগরীর গুড়াতিপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ মরিয়ম বেগম বলেন, দুশো থেকে পাঁচশো টাকার মধ্যে যে কোনো জিনিস কিনতে চাইলে ফুটপাতের দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। অভিজাত শপিংমলগুলোতে সাধারণত দেড় থেকে দুই হাজার টাকার নিচে কাপড় পাওয়া যায় না। এ কারণে আমাদের মতো নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের ছন্দ এসব ফুটপাত ও সাধারণ মার্কেট।

বিজ্ঞাপন

বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাতে এক থেকে দেড়শো বা তার একটু বেশি দরে পাওয়া যাচ্ছে বাচ্চাদের জামা কাপড়। তরুণ-তরুণীদের সব ধরনের পোশাক মিলছে ৫০০ থেকে হাজার টাকায়।

জিতু কবীর/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।