লক্ষ্মীপুর

মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় স্কুলছাত্রসহ ২৫ জনের নামে মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর
প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে মাদকদ্রব্য বিক্রির প্রতিবাদ করায় স্কুলছাত্রসহ ১০ তরুণ-যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের আবুল কালাম জহির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানিমূলক এ মামলা দায়ের করেন। জহির ৬ মাদক মামলার আসামি।

জহিরের দায়ের করা মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এতে লতিফপুর গ্রামে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

জহির লতিফপুর গ্রামের মুনছুর আহমেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে পাশের নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায় পাঁচটি ও সোনাইমুড়ি থানায় একটি মাদক মামলা রয়েছে। এছাড়া ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল চার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি হিসেবে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।

লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জহির এলাকায় কয়েকবছর ধরে ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিলসহ মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসছেন। এজন্য ‘বাবা জহির’ হিসেবে এলাকা তার পরিচিত রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকসেবীরা রাতদিন তার কাছে ভিড় করে। স্থানীয় যুবকদেরও কিছু মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। এতে প্রায় মারামারির ঘটনা ঘটে। জহিরকে একাধিকবার স্থানীয় লোকজন সাবধান করে মাদক ব্যবসা ছাড়তে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর জহির বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। এতে আমানী লক্ষ্মীপুর বেগম হামিদা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মো. সাইফসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ১০ আগস্ট জহিরের বাড়িতে ভাঙচুর করে অভিযুক্তরা। জহির নিজেকে প্রবাসী দাবি করেন। মামলাটি আদালতে আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এতে গত ১৮ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রমজান আলী আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

মামলার আসামিরা হচ্ছে, স্কুলছাত্র মো. সাইফ, মো. কাউছার, মিজান মল্লিক, মো. বাবু, ইমন, মো. শিহাব, মো. সিয়াম, মো. রিজন, মো. সবুজ, ওয়াসিম ও অজ্ঞাত ১৫ জন। তাদের বয়স ১৪ থেকে ৩০।

জহিরের বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল মান্নান মনা ও লাকি বেগম জানায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর জহিরের বাড়িতে মুখোশধারী লোকজন হামলা চালায়। মাদক ব্যবসা নিয়ে ঘটনাটি ঘটতে পারে। ১০ আগস্ট তার বাড়িতে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাটি পুনরায় তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেড়িয়ে আসবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মামলার আসামি মিজান মল্লিক বলেন, মাদক বেচাকেনার প্রতিবাদ করায় জহির আমাদের সাজানো মামলায় জড়িয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি।

মামলার বাদী আবুল কালাম জহির দাবি করেন, চাঁদা না দেওয়ায় আসামিরা বাড়িতে হামলা করে। তিনি ১২ বছর এলাকায় থাকেন না। সৌদি আবর ছিলেন, এখন চট্টগ্রাম থাকেন। নোয়াখালীর মাদক মামলাগুলোতে অজ্ঞাত হিসেবে তাকে জড়ানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রমজান আলী বলেন, সাক্ষীরা ভয়ে সাক্ষ্য দেয়নি। বাদী জহিরের বিরুদ্ধে মাদক মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে জানা নেই। জহির নিজেকে প্রবাসী বলে দাবি করেছেন। তবে কোনো দেশে ছিলেন সেটি জানাতে পারেননি এ কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ বলেন, জহিরের বিষয়ে আপাতত কোনো তথ্য নেই। তবে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।

কাজল কায়েস/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।