লিবিয়ায় নির্যাতন

দালালকে ৪৬ লাখ টাকা দিয়েও বাঁচানো গেল না সজিবকে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৮:৫৯ পিএম, ২০ মার্চ ২০২৫
নিহত সজিব সরদার

লিবিয়ার বন্দিশালায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মাদারীপুর শিবচরের সজিব সরদার (২৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ভোরে তার মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।

বিজ্ঞাপন

নিহত সজিব সরদার উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের চান মিয়া সরদারের ছেলে।

দালালকে ৪৬ লাখ টাকা দিয়েও বাঁচানো গেল না সজিবকে

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ইতালি যাওয়ার জন্য চার মাস আগে বাড়ি ছাড়েন সজিব ও তার চাচাতো ভাই রাকিব। স্থানীয় দালালের মাধ্যমে প্রথমে লিবিয়া পৌঁছান দুজন। পরে সেখানে মাফিয়াদের হাতে বন্দি হন তারা। এরপর থেকেই তাদের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। নির্যাতনের ভিডিও তাদের পরিবারের লোকজনের কাছে পাঠিয়ে দফায় দফায় টাকা নেওয়া হয়।

মাফিয়াদের নির্যাতনে একপর্যায়ে সজিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় তাকে আরেক দালালের তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দেওয়া হয়। বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে তার মৃত্যু হয়। ওই রাতেও সজিবের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

আরও পড়ুন:

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

স্বজনরা জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া এলাকার দালাল বোরহান বেপারীর মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকা চুক্তিতে সজিবকে ইতালির নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। পরে লিবিয়ায় নিয়ে সজিবসহ দুজনকে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয় দালালরা। এরমধ্যে দুই দফা বিক্রি করা হয় সজিবকে। তাকে মারধর করে দফায় দফায় ৪৬ লাখ টাকা আদায় করে দালাল চক্র। বুধবার সজিবের অবস্থা খারাপ দেখে মাফিয়ারা রাস্তায় ফেলে রাখে। পরে লিবিয়ায় থাকা পরিচিত কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসেন। তারা বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

নিহত সজিবের বাবা চান মিয়া সরদার বলেন, ‘আমার ছেলেকে দালাল বোরহান ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে যায়। পরে সেখানে বিক্রি করে দেয়। চার মাস আটকে রেখে মারধর করে। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। মারতে মারতে আমার ছেলেটা গতকাল মরে গেছে। বুধবার রাতেও ওর সঙ্গে আমাদের কথা হয়। তখনো নির্যাতনের কথা বলে। বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যুর খবর পাই।’

দালালকে ৪৬ লাখ টাকা দিয়েও বাঁচানো গেল না সজিবকে

বিজ্ঞাপন

সজিবের বোন শামীমা আক্তার বলেন, ‘দফায় দফায় ৪৬ লাখ টাকা দিয়েও ভাইকে বাঁচাতে পারলাম না। জমিজমা বিক্রি করে দিছে ওর জন্য। সরকারের কাছে আমার ভাইয়ের লাশ যেন বাড়ি আসে এই দাবি জানাই। দালাল বোরহানের ফাঁসি চাই।’

এ বিষয়ে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভীন খানম বলেন, বিষয়টি মর্মান্তিক। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।