মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপ

দুই পৌরসভায় ২৫ বছরেও গড়ে ওঠেনি ডাম্পিং স্টেশন

এম মাঈন উদ্দিন
এম মাঈন উদ্দিন এম মাঈন উদ্দিন , উপজেলা প্রতিনিধি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৫:০২ পিএম, ২০ মার্চ ২০২৫
এভাবেই মহাসড়কের পাশে ফেলা হয় ময়লা-ছবি জাগো নিউজ

>>ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা
>>ময়লায় দেওয়া আগুনের ধোঁয়ায় ঘটছে দুর্ঘটনা
>>বায়ুবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের প্রথম শ্রেণির দুটি পৌরসভায় কোনো ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নেই। পৌর এলাকার প্রতিদিনের ময়লা ফেলা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে। ময়লা ধ্বংসে আগুন দেওয়ার ফলে সৃষ্ট ধোঁয়ায় দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই অংশের উত্তর পাশের বাইপাস এলাকায় পৌরসভার ফেলা ময়লার ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে একটি প্রাইভেটকার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

পৌর এলাকার ময়লার কিছু অংশ সড়কের পাশে ফেলে আগুন দিয়ে ধ্বংস করি। তবে সিংহভাগ ময়লা পাহাড়ের পাদদেশে গর্ত করে পুঁতে ফেলা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বারইয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভার জন্য একটি ময়লা ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে বারইয়ারহাট পৌরসভা প্রতিষ্ঠার গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০০০ সালের ২৭ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয় উত্তর চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকা খ্যাত বারইয়ারহাট পৌরসভা। ২ দশমিক ১২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রথম শ্রেণির বারইয়ারহাট পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা ১১ হাজার ৬০২ জন। পরিবার রয়েছে ২ হাজার ৩৯৯টি। এছাড়া রয়েছে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ১৫টি ছোটবড় কলকারখানা। ব্যাংক, বিমা, হাসপাতাল, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ পৌরসভাটিতে কোনো ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নেই। ফলে যাবতীয় ময়লা ফেলা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে।

ময়লার কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়-ফাইল ছবি
ময়লায় দেওয়া আগুনের ধোঁয়ায় ঘটে দুর্ঘটনা-ফাইল ছবি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন:

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারইয়ারহাট পৌরসভায় অবস্থিত ‘আল নূর হাসপাতাল’র এক কর্মকর্তা বলেন, সড়কের পাশে হাসপাতালের সামনে ময়লাগুলো এনে ফেলা হচ্ছে। ময়লার দুর্গন্ধে রোগীরা হাসপাতালে এসে দুর্ভোগে পড়ছেন। অনেক রোগী ময়লার দুর্গন্ধে এখানে না এসে অন্য হাসপাতালে চলে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বারইয়ারহাট পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সমরকান্তি চাকমা বলেন, বারইয়ারহাট পৌরসভা ভবিষ্যতে একটি শহরে পরিণত হবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমরা ময়লা ডাম্পিংয়ের জন্য ১ একর ৬৫ শতক জমি ক্রয় করেছি। বরাদ্দ পেলে একটি পরিকল্পিত ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে। আপাতত অন্য পৌরসভার মতো ময়লাগুলো সড়কের পাশে ফেলে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তিন একর জমিতে মিরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভার মাঝামাঝি স্থানে একটি ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জমি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান। উপযুক্ত জমি পেলে শিগগিরই ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে।

এদিকে ২০০০ সালের ৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠা হয় মিরসরাই পৌরসভা। শুরুতে ‘গ’ শ্রেণিতে থাকলেও পরে ‘খ’ শ্রেণি হয়ে ২০২৩ সালের ১৪ মে ‘ক’ শ্রেণি অর্থাৎ প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। মিরসরাই পৌরসভার মোট আয়তন ১০ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার। ৯টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা ২০ হাজার ৭১ জন। এখানে ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩ হাজার ২০০টি পরিবার। উপজেলা সদরে হওয়ায় মিরসরাই পৌরসভাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও নেই কোনো ময়লার ডাম্পিং স্টেশন। প্রতিদিনের ময়লা ফেলা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর দিকে বাইপাস এলাকায়। এতে জনদুর্ভোগ বাড়ার পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। ময়লা পোড়াতে আগুন দেওয়ার পর সড়কে গাড়ি চালাতে কষ্ট হয় চালকদের। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ওই এলাকায় ময়লায় দেওয়া আগুনের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে একটি প্রাইভেটকার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

jagonews24
ময়লার কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়-ফাইল ছবি

আরও পড়ুন:

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে মিরসরাই পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা কাইয়ুম উদ্দিন বলেন, আমরা পৌর এলাকার ময়লাগুলোর কিছু অংশ সড়কের পাশে ফেলে আগুন দিয়ে ধ্বংস করি। তবে সিংহভাগ ময়লা পাহাড়ের পাদদেশে গর্ত করে পুঁতে ফেলা হয়।

বারইয়ারহাট পৌরসভা ভবিষ্যতে একটি শহরে পরিণত হবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমরা ময়লা ডাম্পিংয়ের জন্য ১ একর ৬৫ শতক জমি ক্রয় করেছি। বরাদ্দ পেলে পরিকল্পিত একটি ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে। আপাতত অন্য পৌরসভার মতো ময়লাগুলো সড়কের পাশে ফেলে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বারইয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভার জন্য একটি ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণেও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রনি সাহার কাছে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন একর জমিতে মিরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভার মাঝামাঝি স্থানে একটি ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জমি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান। উপযুক্ত জমি পেলে শিগগির ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

এমএমডি/এসএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।