ঠাকুরগাঁও
ডেকে নিয়ে কলেজছাত্রকে হত্যা, আসামির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি কলেজছাত্র মিলন হোসেনের। বুধবার (১৯ মার্চ) সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মহেশপুর বিটবাজার এলাকার একটি পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধরা সিজান নামের এক আসামির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এদিকে হত্যার বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসীরা। পরে জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
মিলন হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও ইউনিয়নের চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। তিনি দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র।
গ্রেফতাররা হলেন, ঠাকুরগাঁও সদরের মহেশপুর বিটবাজার এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে সিজান আলী (২৮) ও আরাজি পাইকপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে মুরাদ (২৫) ও সালন্দর ইউনিয়নের শাহীনগর তেলিপাড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে রত্না আক্তার রিভা (১৯)। এসময় মুরাদের হেফাজত থেকে ৪ চার ৯৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২৩ ফেব্রুয়ারি মিলনের সঙ্গে ফেসবুকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয়। একপর্যায়ে সে ব্যক্তি মিলন হোসেনকে দেখা করার কথা বলেন। একই দিন দুপুরে দেখা করার জন্য পীরগঞ্জ থেকে জেলা শহরের মুন্সিরহাট পলিটেকনিকের পিছনে এক লিচু বাগানে যায়। এরপর রাতে মিলন বাড়িতে না আসলে তার বড় ভাই হামিদুর রহমান মিলনের মুঠোফোনে কল করলে ফোন বন্ধ পায়। তাকে ফোনে না পেয়ে তার ভাই পরিবার ও এলাকার লোকজনকে অবগত করলে সবাই মিলে মিলনকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন।
ওই দিন রাত ১টার দিকে মিলনের বাবাকে ফোন করে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি জানান, মিলন তাদের হেফাজতে রয়েছে। তারা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে সদর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করে তার স্বজনরা। অপহরণের তিনদিন পরে ২৬ তারিখে মিলনকে হত্যা করে অপহরণকারীরা। তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিবারের কাছে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ বাগিয়ে নেয় অপহরণকারী চক্রটি। এ ঘটনায় সংবাদ প্রচার হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলন হোসেনকে উদ্ধারে মাঠে নামেন। গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সিজান ও মুরাদকে আটক করে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, অনেক দিন ধরে এ বিষয়ে কাজ করছিলাম। কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। প্রযুক্তির সহযোগিতায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিলনকে খুন করেছেন বলে তারা স্বীকার করেন।
তানভীর হাসান তানু/আরএইচ/জেআইএম