কুমিল্লায় বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ২০

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) দিনগত রাতে উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
আহতরা হলেন, লক্ষ্মীপুর গ্রামের জামায়াত সমর্থক তারেক (৩২), হানিফ (৪৫), জাহিদ (২২), শাকিল (২২), সজিব (২২), নাছির (২৫), একরামুল হক কুসুম (৪৫) এবং বিএনপি সমর্থক সবুজ মিয়া (৩০), মো. ইউনুছ মিয়া (৫৫), সুমন মিয়া (৪০), সাগর মিয়া (৪০), ছবুরা বেগম (৪৫), আবুল কালাম (৫৬), আবুল কাশেম (৪৫) ও মায়া বেগম (৬০)।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুর গ্রামের জামায়াত সমর্থক মোহাম্মদ তারেক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালে একটি ধর্ষণ মামলা হয়। ওই মামলার বিষয়ে গত ১৩ মার্চ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বিএনপি সমর্থক হৃদয় নামের এক যুবক। ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে গত ১৬ মার্চ প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য সোমবার রাতে বৈঠক হয়। বৈঠককে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের প্রায় ২০০-৩০০ লোক জড়ো হন।
মীমাংসা বৈঠক চলাকালীন বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে জামায়াতের ৮ জন আহত হন। তাদের মধ্যে এক জনকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে, তিনজনকে ফেনী হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং চারজনকে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অপরদিকে বিএনপির ১০জন কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের দুজনকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. বেলাল হোসাইন বলেন, মূলত ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের দুই যুবকের বিরোধ সামাজিক বিরোধে রূপ নেয়। এ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বিএনপি এটাকে ইস্যু বানিয়ে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা শান্ত চৌদ্দগ্রামকে অশান্ত করতে চাইনা। বিএনপির এই অপরাজনীতির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা জানান, জামায়াত নেতাকর্মীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করছি।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এমএন/জেআইএম