ছবির কুয়াকাটার সঙ্গে মিল নেই বাস্তবের


প্রকাশিত: ০৬:১০ এএম, ২৫ মে ২০১৬

`ছবিতে যে কুয়াকাটা দেখেছিলাম তার সঙ্গে বাস্তবে কোনো মিল নেই। আজ যে কুয়াকাটাকে দেখলাম মনে হচ্ছে কেবলই যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো ধ্বংসস্তুপ। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু পর কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা পর্যটক আমানুল ইসলাম এভাবেই আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলেন।

তিনি আরও বলেন, কুয়াকাটা সৈকতে এখন প্রাণের স্পন্দন নেই। বালু চাপা পড়ে আছে ক্ষয়ে যাওয়া স্থাপনা, রাস্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ধ্বংসাবশেষ।

আমানুল ইসলামের থেকে একটু দক্ষিণ পাশে এগিয়ে দেখা হয় ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা আর এক পর্যটক তরিকুল আহমেদের সঙ্গে। তরিকুল আহমেদ বলেন, ভাই কুয়াকাটা সৈকতে এখন হাঁটার জায়গাও নেই। সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এখন শুধুই কংক্রিট ও ঝড়ের তোড়ে ভেঙে পড়া গাছের জঞ্জাল। কংক্রিটের আস্তরণে আমার বন্ধুর পা কেটে গেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সাগর পাড়ের প্রাকৃতিক দেয়াল যেমন উপড়ে ফেলেছে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর নৃশংশতা, তেমনি সাগরের জালোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের জঞ্জাল। মূল সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিমের শুটকি পল্লী ও লেম্বুর বনাঞ্চল এবং পশ্চিমে নারিকেল কুঞ্জ, ইকোপার্ক ও ঝাউবাগান এলাকায় এখন শুধুই ধ্বংসস্তুপ। সাগরের ঢেউয়ের উত্তাল ঝাপটায় বালুর সৈকত ক্ষয়ে যেমন মাটির কংকাল বের হয়ে এসেছে তেমনি গিলে খেয়েছে অন্তত ২০ ফুট মূল সৈকত।

সৈকতের পাড়ের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, কুয়াকাটা সৈকত এমনিতেই ভাঙন কবলিত। শুধু ঝড় না, অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার জোতে সাগরে যখন পানি বৃদ্ধি পায় তখনও ভাঙে। কিন্তু এবার মুহূর্তের মধ্যেই অনেক এলাকা ভেঙে গেছে।

কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা পর্যটকরা জানান, বর্তমান সরকার ২০১৬ সালকে পর্যটন বছর ঘোষণা করলেও কুয়াকাটা সৈকতের উন্নয়ন কিংবা উন্নয়ন পরিকল্পনা না থাকায় ভঙুর সৈকত ক্রমশ ঝড়, জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে আরও ধ্বংস হচ্ছে। সাগর গর্ভে বিলীন হচ্ছে সৈকত ঘেঁষা প্রাকৃতিক বনাঞ্চল, সরকারি ইকোপার্ক ও বাগানের হাজার হাজার গাছ।

তাই জরুরি ভিত্তিতে কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নির্ভর কুয়াকাটা সৈকতকে সাগরে গিলে খেতে বেশি সময় লাগবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।