ময়মনসিংহ

‘ক্রেতা বুঝে মুরগির দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ১১ মার্চ ২০২৫

ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। মাছ ও গরুর মাংস স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। তবে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের সবজির সরবরাহ আছে। মাছও আছে প্রচুর। তবে দাম না কমায় আগের দামেই কিনতে বাধ্য হচ্ছে মাছ। আর কয়েকদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই বাজারে গত সপ্তাহে লেবু ৬০-৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হলেও এখন ৪০-৫০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। মটরশুঁটি ও বরবটি ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিষ্টিকুমড়া ১৫, কচুরলতি ৮০, খিরা ৩০, টমেটো ১৫, শসা ৪০, বেগুন ৫০, গাঁজর ২৫, শিম ২৫, সজিনা ১৪০ ও কাঁচামরিচ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ডাঁটা ১৫ টাকা হালি, দেশি লাউ ৪০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ১৫ টাকা পিস ও ফুলকপি ২০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যাগ হাতে বিভিন্ন সবজি কিনছিলেন আনোয়ার হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, রমজানের আগের দিন থেকে কয়েকদিন বেশিরভাগ সবজির দামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিলেন বিক্রেতারা। সরবরাহ বেশি থাকলেও সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়। তবে কয়েকদিন যাবত বেশিরভাগ সবজির দাম সামান্য কমেছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

‘ক্রেতা বুঝে মুরগির দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা’

সবজি বিক্রেতা আকরামুল ইসলাম বলেন, আশপাশের বিক্রেতাদের সঙ্গে দাম সামঞ্জস্য রেখে সবজি বিক্রি করতে হয়। সবজির দাম যে কোনো মুহূর্তে বেড়ে যেতে পারে। এতে আমাদের মতো খুচরা বিক্রেতাদের কারসাজি নেই। সম্পূর্ণটাই সবজির সরবরাহ ও পাইকারদের ওপর নির্ভর করে।

এদিকে একই বাজারে গত সপ্তাহের মতো কৈ মাছ ২৯০-৩০০, ট্যাংরা ৩৪০-৩৯০, শিং ৩০০-৪৫০, টাকি ৩৫০-৪৮০, পাবদা ২৭০-৩৪০, তেলাপিয়া ১৫০-২২০, সিলভার কার্প ১৯০-২০০, বাউশ ২৮০, শোল ৫০০-৫৫০, রাজপুঁটি ২০০-২১০, পাঙ্গাশ ১৩০-১৮০ ও মৃগেল ২৩০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দুই কেজি ওজনের রুই ও কাতলা ২৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মাছ কেনা শেষে কথা হয় চন্দন কুমার দাস নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে মাছের অভাব নেই। সব ধরনের প্রচুর মাছ নিয়ে বিক্রেতারা বসে আছেন। তবে দাম কমেনি। এক সপ্তাহ আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রশাসনের মনিটরিং কম থাকায় বিক্রেতারা দাম না কমিয়ে তাদের পকেট ভারী করছেন।

বিক্রেতা শামছুল আলম বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত মাছ থাকলেও রোজায় চাহিদাও বেড়েছে। ফলে অন্যান্য বিক্রেতা যে দামে বিক্রি করছেন, আমিও একই দামে বিক্রি করছি। চাইলেও আমি একা দাম কমানোর সুযোগ নেই।

এদিকে বিশাল এই বাজারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুরগির দোকানিরা একেকজন একেক দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছেন।

বিজ্ঞাপন

গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন কোনো বিক্রেতা ১৯০, আবার কোনো বিক্রেতা ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে। এছাড়া অপরিবর্তিত অবস্থায় লেয়ার ৩৪০ ও সাদা কক ২৪০, সোনালি ২৯০, গরুর মাংস ৭৫০ ও খাসির মাংস এক হাজার ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম ৪৫ ও হাঁসের ডিম ৬০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

‘ক্রেতা বুঝে মুরগির দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা’

একেক দোকানে একেক দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিক্রেতা চাঁনু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এটি অনেক বড় বাজার। একসঙ্গে কয়েকটি করে দোকান একেক জায়গায় রয়েছে। ফলে কিছু অসাধু বিক্রেতা ক্রেতা বুঝে সুযোগ মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ২৫ কেজির নাজিরশাইল এক হাজার ৮৫০ টাকা, বিআর পুরাতন ২৮ ও ২৯ জাতের চাল এক হাজার ৬০০, কাটারি এক হাজার ৮৫০, চিনিগুঁড়া আড়াই হাজার ও চিনিগুঁড়া উন্নত তিন হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রমজানের শুরু থেকে চাল বিক্রি কমেছে উল্লেখ করে পাইকারি বিক্রেতা আজিমুল হক বলেন, সারা বছরের প্রতিমাসে যে পরিমাণ চাল বিক্রি হতো, রমজানের শুরু থেকে সে পরিমাণ হচ্ছে না। এমনও দিন যাচ্ছে, ২৫ কেজি ওজনের মাত্র ৫-৬ বস্তা বিক্রি হচ্ছে। অথচ অন্যান্য দিনে কমপক্ষে ১০-১৫ বস্তা চাল বিক্রি করেছি।

রমজান মাসে চালের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমনিতেই চালের বাজার ভালো যাচ্ছে না। অনেক মিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এক মাসের মধ্যে দাম বাড়ার কিংবা কমার সম্ভাবনা নেই।

বিজ্ঞাপন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, বাজারে আমাদের নজরদারি রয়েছে। অভিযান চালানো হবে। কোনো বিক্রেতা অহেতুক দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের ঠকাতে চেষ্টা করার প্রমাণ মিললে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।