জিপিএ-৫ পেয়েও শঙ্কায় সোনিয়া


প্রকাশিত: ০৯:০৪ এএম, ২৩ মে ২০১৬

এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে শঙ্কায় রয়েছে সোনিয়া ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা। ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আলহাজ্ব আমেনা খাতুন বিদ্যাপীঠ থেকে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।

মেধাবী সোনিয়া ২০১০ সালের পিএসসিতে ট্যালেন্ট ফুলে ও ২০১৩ সালের জেএসসিতে সাধারণ কোটায় বৃত্তি পায়। সেই থেকে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও শত কষ্টে পড়ালেখা চালিয়ে গেছে তার পরিবাবর। পাশাপাশি সহপাঠী ও শিক্ষকরাও সোনিয়াকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন।

তবে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ সোনিয়ার সামনে এখন বড় বাঁধা বলে মনে করছেন শিক্ষক, সহপাঠী, এলাকাবাসী ও পরিবারেরর সদস্যরা। ফলে জিপিএ-৫ পাওয়াতেও আশানুরুপ খুশি নয় সবাই।

সেকালুখালী উপজেলার মৌরাট বড় চৌবাড়ীয়া গ্রামের ছবদুল শেখের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। দুই ভাই বোনের মধ্যে সোনিয়া বড়। ছোট ভাই রানা ৭ম শ্রেণির ছাত্র।

সোনিয়া তার ভবিষৎ ইচ্ছা সম্পর্কে জানায়, চিকিৎসক হওয়াই তার লক্ষ্য। তবে পড়াশুনা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত  ইচ্ছে পুরোণ হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সে। তাই উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সবার সহযোগিতা কমনা করেছে সোনিয়া।

সোনিয়ার মা রিজিয়া বেগম বলেন, সম্পদ বলতে তার দুই সন্তান সোনিয়া ও রানা। এদের জন্য কিছু করে যেতে পারলে মরেও শান্তি পেতাম। ফসলি জমিতে ৬ শতক জমি ছাড়া আর কিছু না থাকায় এটুকু দিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হয় তাদের। তাই সময় পেলেই তার বাবা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।

তিনি আরো বলেন, এত কষ্টের মধ্যেও মেয়ের ভালো পড়াশুনা দেখে সবার সহযোগিতা নিয়ে এ পর্যন্ত পড়াশুনা চালিয়ে আসছি। বড় হয়ে সে ডাক্তার হতে চায়, তবে জানিনা ওর ভবিষৎ কী। কে যোগাবে তার পড়াশুনার খরচ।

আলহাজ্ব আমেনা খাতুন বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক শাজাহান আলী বলেন, আমি ওর উন্নত ভবিষৎ কামনা করি।  পড়াশুনার ক্ষেত্রে স্কুল থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছি। ভবিষতে সুযোগ পেলে আরো করার চেষ্টা করবো। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় ওর পড়ালেখা নিয়ে একটু দুশ্চিন্তায় আছি। তাই একজন শিক্ষক হিসেবে বলবো সোনিয়ার পাশে সাবই দাঁড়ান, ওকে সুযোগ দিন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে দেশের জন্য কিছু করার।

জেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান জানান, আলহাজ্ব আমেনা খাতুন বিদ্যাপীঠের সোনিয়ার কথা আমি অনেক শুনেছি। সে একজন মেধাবী ছাত্রী ও অনেক সম্ভাবনাময়। ইতিপূর্বে সে প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছে। আমরা সম্মেলিতভাবে যদি তার পাশে দাঁড়াই, তাহলে সোনিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশ ও জাতির জন্য কিছু করবে। আমি সোনিয়ার সফলতা কামনা করি।

এফএ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।